১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা, গন্তব্যে পৌঁছতে লাগছে অতিরিক্ত সময়

লোহাগড়ায় সড়ক ব্যবহার হচ্ছে ফসল শুকানো ও মাড়াই কাজে

সড়কে শুকাতে দেয়া ফসলের পরিচর্যা করছেন এক গৃহিণী (বাঁয়ে)। আগুনে পুড়ে যাওয়া প্রাইভেট কার (ডানে) : নয়া দিগন্ত -

নড়াইল জেলার সকল সড়ক, আঞ্চলিক সড়ক ও মহাসড়কের ওপর ফসল শুকানো ও মাড়াই কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়ছেন পথচারীসহ বিভিন্ন যানবাহন। প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। গন্তব্যে পৌঁছতেও কালক্ষেপণ হচ্ছে। সম্প্রতি জেলার নড়াগাতী থানা এলাকার একটি সড়কে শুকাতে দেয়া কলাই প্রাইভেট কারের চাকায় পেঁচিয়ে গাড়িটিতে আগুন লেগে যায়। এতে গাড়িটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
জানা গেছে, নড়াইল জেলায় সড়ক ও জনপথের ১৭০ কিলোমিটার এবং এলজিইডির দুই হাজার ২৯৫ কিলোমিটার পাকা ও কাঁচা সড়ক রয়েছে। প্রায় ১০ বছর ধরে জয়পুর-লাহুড়িয়া, লক্ষ্মীপাশা-মহাজন, নড়াইল-কালিয়া, ভাটিয়াপাড়া-নড়াইল, নড়াইল-ফুলতলা, কালিয়া-চাপাইল, কুন্দশী-ইতনা, লোহাগড়া-সিডি বাজার, এড়েন্দা-লুটিয়া, ধোপাদহ-নলদী ভায়া মিঠাপুরসহ প্রত্যেকটি সড়কের ওপর বিভিন্ন মৌসুমী ফসল শুকানো এবং মাড়াই করা হচ্ছে। এসব সড়ক যেন হয়ে উঠছে কোনো কোনো বাড়ির উঠান। আউশ, আমন, বোরো, খেসাড়ি, মসুর ডাল, ধনিয়া, গমসহ বিভিন্ন ফসল এখন রাস্তার ওপরেই মাড়াই ও শুকানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে গাড়িচালক, যাত্রী ও পথচারীরা জানান, সড়কে ফসল শুকানো এ এলাকার অলিখিত নিয়ম হয়ে উঠেছে। প্রতিবাদ করলে কৃষকরা উল্টো গালমন্দ করে। দুর্ভোগ মেনে নিয়েই সড়কে চলতে হচ্ছে তাদের। লক্ষ্মীপাশা-মহাজন সড়কের থ্রি হুইলার চালক মুসা মিয়া বলেন, সড়কগুলোর ওপর কৃষকরা সারা বছরই বিভিন্ন ফসল মাড়াই ও শুকানো হয়। এতে গাড়ি চালাতে সাবধানে। যেকোনো সময় অঘটন ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু উপায় নেই। সড়ক যেন পার্শ্ববর্তী বাড়ির উঠান হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিষেধ করলে অযথা নানা কথা শুনিয়ে দেয়।
উপজেলার লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের বাঁকা গ্রামের ইউপি সদস্য জিরু কাজী বলেন, বৃষ্টির সময় পাকা রাস্তার ওপর ফসল শুকাতে সুবিধা। তাই নিষেধ করলেও কেউ শোনে না। এ বিষয়ে নতুন আইন প্রণয়ন করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) নড়াইল জেলা শাখার সভাপতি সৈয়দ খায়রুল আলম বলেন, রাস্তার ওপর ফসল শুকানো ও মাড়াইয়ের কারণে সড়কে দুর্ঘটনা বাড়ছে। জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি আইন করে সড়কে ফসল মাড়াই কাজ বন্ধ করা উচিত।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আফরিন জাহান বলেন, আইনশৃঙ্খলার সভায় বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement