১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
পুরাকীর্তি

অষ্টগ্রামের কুতুবশাহী মসজিদ

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে ঐতিহাসিক কুতুবশাহী মসজিদ : নয়া দিগন্ত -

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলা সদরে অবস্থিত ইসলামী স্থাপত্যকলার অপূর্ব নিদর্শন কুতুবশাহী মসজিদ। পাঁচগম্বুজ-বিশিষ্ট এ মসজিদটি বাংলার সুলতানি ও মোগল আমলের স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যে নির্মিত। মসজিদটির নির্মাণকাল সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা না গেলেও ঐতিহাসিকদের কেউ কেউ এটাকে ১৬ শতাব্দীর এবং কেউ কেউ ১৭ শতাব্দীতে নির্মিত বলে মনে করেন।
তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিকই মনে করেন, ১৭ শতাব্দীর প্রথম দিকে এ মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। কারণ এ মসজিদে সুলতানি ও মুঘল স্থাপত্যের নির্মাণশৈলী ও কারুকার্য সুস্পষ্ট দেখা যায়।
মসজিদটির নামকরণ হয়েছে ওই আমলের বিখ্যাত দরবেশ কুতুব শাহ্’র নামে। ধারণা করা হয়, অঞ্চলটিতে ওই সময়ে সুলতানি আমলের ধর্মপ্রাণ কোনো শাসকের বিচরণ ছিল। তারই পৃষ্ঠপোষকতায় মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।
আয়তাকার এ মসজিদটি উত্তর দক্ষিণে লম্বায় ৪৬ ফুট ১১ ইঞ্চি এবং পূর্ব-পশ্চিমে ২৭ ফুট ১১ ইঞ্চি। বাংলার চৌচালা ঘরের সাদৃশ্য হলেও এর কার্নিশগুলো নান্দনিক ও আরো বাঁকা। এর চার কোণে আটকোণ বিশিষ্ট চারটি মিনার বা কর্নার টায়েট রয়েছে। যেগুলো নকশা করা। মসজিদের ভেতর ও বাইরের দিকে চোখ জুড়ানো ফুল-পাতার কারুকাজ। এর পূর্ব দেয়ালে তিনটি এবং উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালে দুটি করে চারটি (সর্বমোট সাতটি) খিলান আকৃতির প্রবেশ দ্বার রয়েছে। পূর্ব দেয়ালের তিনটি প্রবেশপথের ঠিক বিপরীতে পশ্চিম দেয়ালে তিনটি মেহরাব রয়েছে। ওপরে খুবই সুন্দর একটি গম্বুজ রয়েছে। চার পাশে আরও চারটি ছোট গম্বুজ। গম্বুজগুলোর চূড়ায় নান্দনিক অলঙ্করণ করা।
মসজিদের বাইরে দক্ষিণ পাশে কবর সাদৃশ একটি স্থাপনা রয়েছে। অনেকের ধারণা এখানে কুতুব শাহের কবর রয়েছে। তবে এটা কুতুব শাহ্ বা সুলতানি কোনো শাসকের কবর কি না জানা যায়নি।
শত শত বছর ধরে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এ মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে আসছেন। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের কারণে ১৯০৯ সালে সরকার মসজিদটিকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে। বর্তমানে প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে পুরাকীর্তিটি পরিচালিত হচ্ছে। দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটি দেখতে প্রতিদিনই শত শত পর্যটক এখানে এসে ভিড় করেন।


আরো সংবাদ



premium cement