বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা বন্ধ রেখেছেন উপকূলীয় জেলেরা
- বরগুনা প্রতিনিধি
- ২৯ মার্চ ২০২৪, ০০:০৫
বঙ্গোপসাগরে হঠাৎ করে বেড়েছে জেলিফিশের আধিক্য। এমন পরিস্থিতিতে মাছ ধরা বন্ধ রেখেছেন উপকূলীয় বরগুনার জেলেরা। গত এক সপ্তাহ আগে বরগুনা থেকে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যায় দু’টি ট্রলার এফবি জাহানারা এবং এফবি মায়ের দোয়া। তারা মাছ না পেয়ে সোমবার রাতে তারা সাগর থেকে ফিরে আসেন।
জেলিফিশ মাছ না হলেও একে মাছ হিসেবেই বলা হয়। পৃথিবীর সব সাগর-মহাসাগরে এদের দেখা যায়। রক্তহীন আজব এক প্রাণী জেলিফিশ। এদের হাজারো প্রজাতি রয়েছে। জেলিফিশ মূলত মেসোগ্লিয়া দিয়ে তৈরি। এদের শরীরের ৯৫ ভাগ পানি। জেলিফিশের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান বক্স জেলিফিশ সবচেয়ে বেশি বিষাক্ত। বলা হয় সাগরের সব থেকে বিশাক্ত প্রাণীর একটি বক্স জেলিফিশ।
এফবি জাহানারা ট্রলারের মাঝি আনোয়ার বলেন, অনেক দিনের বাজার নিয়ে ১৫ জন সাগরে মাছ ধরতে যাই। গত কয়েক দিন মাছ ধরার অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু জাল ফেললেই উঠে আসছে জেলিফিশ। এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি বলেন, জাল ফেলতেই জেলিফিশে জাল ভরে যায়। আমার জীবনে এমন জেলিফিশ কখনো দেখিনি। তাই মাছ ধরা বন্ধ করে লোকসান মাথায় নিয়ে তীরে চলে এসেছি। সামনে ঈদ পরিবারের মুখে কিভাবে হাসি ফোটাবো জানি না।
পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার জানান, দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টির কারণে লবণাক্ততার সৃষ্টি হয়ে জেলিফিশের জন্ম হয়েছে বলে ধারণা তার। বৃষ্টি হলে এগুলো মারা যাবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও ওশানোগ্রাফি বিভাগের প্রধান ড. সুব্রত সরকার বলেন, জেলিফিশ বেড়ে যাওয়ার কতগুলো কারণ রয়েছে। এ নিয়ে গবেষণা না করা পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাবে না। তবে জেলিফিশ বেড়ে যাওয়ার মধ্যে একটি হলো সাগরে কচ্ছপ কমে যাওয়া, সামুদ্রিক কিছু মাছ ও সি বার্ডের সংখ্যা কমে যাওয়া।
কারণ কচ্ছপ, সামুদ্রিক কিছু প্রজাতির মাছ ও সি বার্ড জেলিফিশ খেয়ে থাকে। এদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় জেলিফিশের বংশবিস্তার বাড়তে পারে। আরো একটি কারণ হতে পারে পানিতে অর্গানিক ওয়েস্ট বেড়ে যাওয়া। এ কারণে উপকূলের মোহনার দিকে ভেসে আসতে পারে জেলিফিশ। এ ছাড়া জলবায়ুর প্রভাব, বৃষ্টিপাত কমে যাওয়া, নদীর পানি প্রবাহ কম হওয়ার কারণে উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততা বেড়ে জেলিফিশ বাড়তে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা