১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

অবৈধ যানের দখলে মহাসড়ক কুমিল্লায় নিত্য যানজট

-

ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে দরজা খোলা মাইক্রোবাস ও নানা অবৈধ যানের দৌরাত্ম্য। প্রাইভেট পরিবহনের নামে এসব যান এখন গণপরিবহনে রূপ নিয়েছে। মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে মিয়ারবাজার পর্যন্ত এসব অবৈধ যানে চলছে অবাধে যাত্রী পরিবহন। এগুলোর অধিকাংশরই নেই ফিটনেস ও রোড পারমিট।
প্রতিদিন গেট পাস (জিপি) ও মাসিক টোকেনের নামে চাঁদা দিয়ে বছরের পর বছর চলছে কয়েক হাজার অবৈধ যানবাহন। আর স্বল্প দূরত্বের যাত্রী উঠানো-নামানোর কারণে সর্বদাই এসব গাড়ির থাকে দরজা খোলা। যে কারণে এই যানগুলো স্থানীয়দের কাছে ‘দরজা খোলা গাড়ি’ নামেও পরিচিত। মহাসড়কের প্রতিটি স্ট্যান্ড এলাকায় এসব যানবাহন এলোপাতাড়ি দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রী উঠানো-নামানো করানোয় মহাসড়কের গৌরীপুর, চান্দিনা, নিমসার, ময়নামতি এলাকায় যানজট এখন নিত্যসঙ্গী। স্থানীয়দের মতে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণও হয়ে দাঁড়িয়েছে এসব যানবাহন।
এ দিকে এসব যানবাহন মহাসড়ক থেকে সরিয়ে স্বল্প দূরত্বের যাত্রী পরিবহনের জন্য মিনিবাস সার্ভিস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জেলা প্রশাসন ও হাইওয়ে পুলিশ। গত ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর এ বিষয়ে একটি রেজ্যুলেশনও করেন জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। সেই মোতাবেক মিনিবাস মালিক সমিতি ইলিয়টগঞ্জ থেকে ময়নামতি পর্যন্ত ৫০টি এবং ময়নামতি থেকে মিয়ারবাজার পর্যন্ত ৩০টি মিনিবাস সার্ভিস চালু করে। বিধি মোতাবেক রোড পারমিট ও রেজিস্ট্রেশনও দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মহাসড়কের অবৈধ যানবাহনের কারণে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে মিনিবাস সার্ভিস চালু করে বিপাকে পড়েছে মিনিবাস মালিক সমিতি। পর্যাপ্ত যাত্রী না থাকায় বেতন ভাতা নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন মিনিবাস শ্রমিকরাও।
ময়নামতি-ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি কে এম জামাল হোসেন জানান, মহাসড়কে দুর্ঘটনা রোধে অবৈধ মাইক্রোবাস সার্ভিস তুলে দিয়ে মিনিবাস চালু করতে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেই সভায় আমাদেরকে ইলিয়টগঞ্জ থেকে ময়নামতি পর্যন্ত ২৬ আসনের ৫০টি ও ময়নামতি থেকে মিয়ারবাজার পর্যন্ত ২৬ আসনের ৫০টি মিনিবাস নামানোসহ সেগুলোর রুট পারমিট ও রেজিস্ট্রেশন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সভার রেজ্যুলেশন অনুযায়ী আমাদেরকে জানানো হয়েছিল, মিনিবাস সার্ভিস চালু হলে অবৈধ মাইক্রোবাস মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া হবে।
প্রশাসনের নির্দেশে আমরা মিনিবাস সার্ভিস চালু করলেও অবৈধ মাইক্রোবাস চলাচল আজো বন্ধ করা হয়নি। ওই রোডে হাজার হাজার অবৈধ যানবাহন থাকার কারণে আমরা যাত্রী পাচ্ছি না। অনেক মালিক লোন নিয়ে গাড়ি নামিয়েছেন। এখন লোনের টাকাও পরিশোধ করতে পারছেন না। এমনকি মাস শেষে শ্রমিকের বেতন দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন। মহাসড়ক থেকে ওইসব অবৈধ যানবাহন দ্রুত সরিয়ে নিতে আমরা প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিওন পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ জানান, মূলত বিষয়টি নিশ্চিত করবেন কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক। এ ছাড়া এই মুহূর্তে ওইসব গাড়ি তুলে দিলে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়তে পারেন। স্বল্প দূরত্বের যাত্রীদের চলাচলে মহাসড়কে পর্যাপ্ত বাস নামানো হলে ওইসব পরিবহন বন্ধ করা যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।


আরো সংবাদ



premium cement