সাত বছর পর মা-বাবাকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত খাদিজা
- রাজশাহী ব্যুরো
- ১৮ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০
২০১২ সালে প্রতিবেশী এক ভাইয়ের মাধ্যমে ভারতে পাচার হয়েছিল খাদিজা খাতুন (১৯)। এরপর দীর্ঘ ছয় বছর ভারতের মালদহে সরকারি এক সেফহোমে থাকতে হয়েছে তাকে। গত বছরের ১৯ এপ্রিল কোনো এক মাধ্যমে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসে সে। পরে রাজশাহীর মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডির শেল্টার হোমে আশ্রয় নিয়েছিল। সেই থেকে খাদিজা দীর্ঘ এক বছর চার মাস এসিডির শেল্টার হোমেই ছিল। সব মিলিয়ে দীর্ঘ সাত বছর পর অবশেষে গতকাল এসিডির মাধ্যমে মা-বাবাকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে খাদিজা।
এ সময় খাদিজা জানায়, ‘দীর্ঘ সাত বছর পর মায়ের মায়াভরা মুখ দেখতে পেয়ে মনে হচ্ছে আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছি! কোনো দিন ভাবতেও পারিনি বাবা-মাকে ফিরে পাবো! পরিবারকে ফিরে পেয়ে এত খুশি হয়েছি যা কাউকেই বুঝাতে পারব না। আমি এসিডির প্রতি কৃতজ্ঞ। পরিবারকে ফিরিয়ে দেয়ার ঋণ আমি কোনো দিন শোধ করতে পারব না।’
খাদিজার বাবার নাম আবুল কাশেম ফকির আর মা আনোয়ারা বেগম। এসিডির অফিসে এসে মা আনোয়ারা বেগম জানান, তাদের বাড়ি ময়মনসিংহ। তবে দীর্ঘ দিন যাবত ঢাকার গুলশান-২ এর নূরের চালা এলাকায় পরিবার নিয়ে বাস করছিলেন আনোয়ারা। এখনো সেখানেই বসবাস করছেন তারা। ২০১২ সালে খাদিজা যখন নিখোঁজ হয় তার আগে সে মাদরাসায় পড়ছিল। পড়ালেখার পাশাপাশি পাশের বাসার ধনাঢ্য এক ব্যক্তির সন্তানকে দেখাশোনার কাজ করছিল খাদিজা। একদিন ওই বাড়িতে গিয়ে সেখান থেকেই নিখোঁজ হয় খাদিজা। পরে জানতে পারেন, প্রতিবেশী এক লোকের মাধ্যমে আদরের ধন খাদিজা ভারতে পাচার হয়ে গেছে। তারপর থেকে আনোয়ারা মেয়েকে পাওয়ার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন।
আনোয়ারা বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ আগে আমি এসিডির মাধ্যমে হঠাৎ মেয়ের খোঁজ পাই। তখন থেকেই মেয়ের সাথে মোবাইলে কথা বলি। বুঝতে পারি এই সেই আমার খাদিজা। অবশেষে গুলশান থেকে মেয়েকে নিতে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা হই। এসিডি অফিসে মেয়েকে পেয়ে খুব ভালো লেগেছে। মেয়েকে পেয়ে মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছি।’
এসিডির শেল্টার হোম ম্যানেজার পুষ্পরাণী বিশ্বাস জানান, ‘২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থানার মাধ্যমে আমাদের শেল্টার হোমে আসে খাদিজা। তারপর থেকে সে শেল্টার হোমেই লালন-পালন হচ্ছিল। এখানে আসার পর থেকেই খাদিজা পরিবারের কাছে ফিরে যেতে চেয়েছিল। আমরা খোঁজ পাওয়ার সাথে সাথে তাকে মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলাম। অবশেষে আমরা পরিবারের খোঁজ পেয়ে আনুষ্ঠানিকতা শেষে শনিবার দুপুরে খাদিজাকে মা-বাবার কাছে হস্তান্তর করেছি।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা