সোনারগাঁওয়ে দলিল নিবন্ধনে অতিরিক্ত উপকর
রাজস্বসহ কমে গেছে দলিল নিবন্ধনে- হাসান মাহমুদ রিপন সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ)
- ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে দলিল নিবন্ধনে অতিরিক্ত উপকর নির্ধারণ করায় সরকারি রাজস্বসহ দলিল নিবন্ধন কমে গেছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন দলিল দাতা, গ্রহীতাসহ নিবন্ধনে সংশ্লিষ্টরা। উপকর কমানোর দাবিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে স্মারকলিপি দিয়েও কোনো লাভ হয়নি বলে জানিয়েছেন ভূমি গ্রহীতারা। গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর গণস্বাক্ষর দিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপির অনুলিপি নিবন্ধন অধিদফতরের মহা পরিদর্শক, নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিষ্ট্রার ও সোনারগাঁ উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রারকেও দেয়া হয়েছিল। তবে দীর্ঘ ৫ মাস অতিবাহিত হলেও কোনো লাভ হয়নি। অতিরিক্ত উপকর নির্ধারণ করায় সোনারগাঁও সাব রেজিষ্ট্রি কার্যালয়ে সাফকবলা দলিল নিবন্ধন কমে যায়।
জানা যায়, সোনারগাঁও উপজেলার সব মৌজার ক্ষেত্রে উপকর দলিলে ৩ শতাংশ ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) আওতাধীন অঞ্চলের জন্য উৎস কর ৪ শতাংশ ছিল। যা আয়কর আইন, ২০২৩ ও আয়কর বিধিমালা ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই মোতাবেক জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (আয়কর) প্রজ্ঞাপন জারি করে।
প্রজ্ঞাপন অনুসারে সোনারগাঁওয়ের জমি রেজিষ্ট্রেশনের ক্ষেত্রে উৎসকর শুধু রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তালিকায় জমি কাঠাপ্রতি ৫০ হাজার টাকা নির্ধারিত হয়। উপজেলার ১২০টি মৌজার মধ্যে অধিকাংশ মৌজায় ভূমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে বিক্রয় মূল্যে তিন থেকে চার গুণ বেশি কর নির্ধারণ করা হয়। এতে দলিল দাতা, গ্রহীতাসহ রেজিষ্ট্রশনে সংশ্লিষ্টরা ভোগান্তিতে পড়েন।
স্থানীয়দের দাবি, নারায়ণগঞ্জের ৫টি উপজেলার মধ্যে শুধু সোনারগাঁও উপজেলায় অতিরিক্ত উপকর এ দলিল নিবন্ধন হয়। জমি নিবন্ধনে উপকর না কমানোর ফলে জমি ক্রয়-বিক্রয় কমে গেছে। ফলে দূরারোগ্য চিকিৎসা, মেয়ের বিয়ে, প্রবাসে যাওয়াসহ আর্থিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে করে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছেন।
নোয়াগাঁও ইউনিয়নের চৌরাপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রবাসে যাওয়ার জন্য ৩০ শতাংশ জমি বিক্রির উদ্দেশ্যে ৬ লাখ টাকায় বিক্রয় করি। জমির গ্রহীতা সাফকবলা দলিল করতে ১২ লাখ টাকা দলিল নিবন্ধন ফি দিতে হবে তাই জমির দলিল নিবন্ধন করছেন না। ফলে প্রবাসে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সোনারগাঁও সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখক বিল্লাল হোসেন জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নতুন কর নির্ধারণের ফলে সাফকবলা দলিল সৃজন প্রায় বন্ধ। সোনারগাঁওয়ের পার্শ্ববর্তী আড়াইহাজার ও রূপগঞ্জ উপজেলায় কাঠাপ্রতি উপকর মাত্র ২০ হাজার টাকা। আমাদের উপজেলায় উপকর ৫০ হাজার টাকা। কাঠা পদ্ধতি বাদ দিয়ে দ্রুত পূর্বের কর নির্ধারণ করলেই সমাধান সম্ভব।
সোনারগাঁও উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার মুজিবুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত উপকর নির্ধারণ করায় সাফকবলা দলিল সৃজন কমে যাচ্ছে। দলিল সৃজন কমে যাওয়ায় রাজস্ব কমে গেছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিষ্ট্রার মোহাম্মদ আব্দুল হাফিজ বলেন, সোনারগাঁও ছাড়া অন্যান্য উপজেলার নতুন উপকর নির্ধারণ করে দলিল সৃজন হচ্ছে। সোনারগাঁয়ে নতুন করে উপকর নির্ধারণ প্রয়োজন। তা হলেই দলিল সৃজন সংখ্যা বাড়বে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা