রাজশাহীতে সাবেক এমপি ফারুকের রোষানলে ব্যবসায়ী
পলাতক এই এমপি এক নেতার আশ্রুয়ে রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে- রাজশাহী ব্যুরো
- ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী বর্তমানে পলাতক। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুথানের পরপরই তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। বর্তমানে তিনি ঠিক কোথায় আছেন সে ব্যাপারে প্রশাসনের তরফ থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি। তবে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে সমালোচিত সাবেক এই এমপি একটি রাজনৈতিক দলের এক নেতার তত্ত্বাবধানে বহাল তবিয়তেই রয়েছেন বলেই জানা গেছে। এ দিকে পুলিশের খাতায় তিনি পলাতক থাকলেও তার রোষানলে পড়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন কে এম মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী।
জানা গেছে, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী থিম রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান। আর এ কোম্পানিটির অংশীদার এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কে এম মোস্তাফিজুর রহমান। এই কোম্পানি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে আদালতে সালিসি (আরবিট্রেশন) মামলা হয়। মামলাটি বর্তমানে আদালতে চলমান রয়েছে। থিম রিয়েল এস্টেটের এমডি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বাদি হয়ে ঢাকা জেলা জজ আদালতে মামলাটি করেন।
মামলা ও সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, থিম রিয়েল এস্টেটের ৩৫ শতাংশের মালিক হলেন ওমর ফারুক চৌধুরী। আর মোস্তাফিজুর রহমান ২৫ শতাংশের মালিক। এ ছাড়া ২০ শতাংশ করে আরো দু’জন পরিচালকের মালিকানা রয়েছে। রাজশাহীতেও থিম রিয়েল এস্টেট কোম্পানিটি ‘থিম ওমর প্লাজা’ নামের একটি ১০তলা ভবন নির্মাণ করে। ভবনটির অবস্থান রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মৌজায় নিউমার্কেটের উত্তর পাশে। এই জমির প্রায় ৩০ কাঠার মালিক ওমর ফারুক চৌধুরী। নিজের জমিতে বহুতল ভবন গড়ে তুলতে থিম রিয়েল এস্টেটের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন তিনি; অথচ জমিটি তিনি আগেই বন্ধক রেখেছিলেন একটি বেসরকারি ব্যাংকে। ওমর ফারুক চৌধুরী থিমের সাথে চুক্তি করার সময় বিষয়টি গোপন রেখে প্রতারণা করেছেন বলে উল্লেখ করা হয় মামলার আরজিতে। এতে কোম্পানি আর্থিক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
মামলার নথিপত্রে আরো জানা গেছে, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনেক অর্থ বিনিয়োগ করে যথাসময়ে ভবনটি নির্মাণ করেন। এতে কোম্পানিটি প্রায় ৩১ কোটি টাকা দেনা হয়ে যায়। ভবনটির ফ্ল্যাট ও দোকান বিক্রি করে এই টাকা পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তা না করে কোম্পানির চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ডেকে বলে দেন, এই ভবন এখন তার নিজের। এতে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কোনো অংশ নেই। এই ভবনে তাকে আর ঢুকতে দেয়া হবে না।
ওমর ফারুক চৌধুরী থিম রিয়েল এস্টেট কোম্পানির ব্যাংক হিসাব থেকে সাত-আট কোটি টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেছেন বলেও আরজিতে উল্লেখ করা হয়।
সাবেক এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী পলাতক এবং তার মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় এ ব্যাপারে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভভ হয়নি। ভুক্তভোগী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওমর ফারুক চৌধুরী পুলিশের তালিকায় পলাতক। কিন্তু তিনি যে রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় ফারুক চৌধুরী রয়েছেন সেই নেতা সম্পর্কে বেয়াই হন; অর্থাৎ ফারুক চৌধুরীর মেয়ের সাথে ওই নেতার ছেলের বিয়ে দেয়া হয়েছে।
রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) রফিকুল আলম বলেন, ওমর ফারুক চৌধুরী পলাতক। তাকে পেলেই পুলিশ গ্রেফতার করবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা