২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ২১ শাবান ১৪৪৬
`

এক ছটাক ধানও কিনতে পারেনি গোপালগঞ্জের ৫ গুদাম

-

গোপালগঞ্জের বিভিন্ন হাটবাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহী নন। তারা তাদের ধান বেশি দামে বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। ফলে জেলার ছয়টি গুদামের মধ্যে পাঁচটি খাদ্যগুদামে কৃষকের কাছ থেকে এক ছটাকও ধান কেনা সম্ভব হয়নি।
চলতি আমন মৌসুমে গোপালগঞ্জ জেলায় ছয়টি খাদ্যগুদামে ৯০৬ মেট্রিক টন ধান ও তিন হাজার ৪২৯ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের ল্যমাত্রা ধার্য করা হয়। প্রতি কেজি চালের দাম ৪৭ ও প্রতি কেজি ধানের দাম ৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ বাজারে প্রতি কেজি চাল ৫৫ টাকা থেকে ৭০ টাকা এবং ধানপ্রতি কেজি ৩৫-৩৬ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বাজারের চেয়ে সরকারি দর কম হওয়ায় খাদ্যগুদামে ধান-চাল সংগ্রহে কৃষকদের সাড়া মিলছে না।
জানা গেছে, গত তিন ডিসেম্বরে এ জেলায় সরকারিভাবে ধান ও চাল ক্রয় কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান। এখন পর্যন্ত টুঙ্গিপাড়া খাদ্যগুদামে ২৪ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া জেলার চার উপজেলায় মুকসুদপুর, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ সদর, কাশিয়ানীর দু’টি খাদ্যগুদাম রামদিয়া ও ভাটিয়াপাড়াসহ মোট পাঁচটি গুদামে এক ছটাকও ধান বিক্রি করেননি কৃষকরা।
সংগ্রহ বিবরণী থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলায় ৯০৬ মেট্রিক টন ধান লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে মাত্র ২৪ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। ল্যমাত্রার বিপরীতে সংগ্রহের এ হার মাত্র তিন শতাংশ। অন্য দিকে তিন হাজার ৪২৯ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের ল্যমাত্রার বিপরীতে সিদ্ধ চাল সংগৃহীত হয়েছে দুই হাজার ৭৬৯ মেট্রিক টন। সিদ্ধ চাল সংগ্রহের হার ৮১ শতাংশ। একই সময়ে ৮৭ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহের ল্যমাত্রার বিপরীতে ৩৭ মেট্রিক টন ৫৫০ কেজি আতপ চাল সংগৃহীত হয়েছে। আতপ চাল সংগ্রহের হার ৪৩ শতাংশ।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা গ্রামের কৃষক কালু শেখ, আলমগীর শেখ বলেন, সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে গিয়ে আর্দ্রতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে ঝামেলা পোহাতে হয়। আবার ধান বিক্রির টাকা নিতে গেলে ব্যাংক হিসাব খুলতে হয়। তাই এসব ঝামেলার কারণে কৃষকরা সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রিতে অনীহা দেখাচ্ছেন। এ ছাড়া সরকারি সংগ্রহ মূল্যের চেয়ে বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় কেউ ধান দিতে চাইছেন না।
প্রগতি গ্রীন অটো রাইসমিলের ম্যানেজার অমৃত সাহা বলেন, সরকার চালের দাম নির্ধারণ করেছেন ৪৭ টাকা কেজি। এখন ধানের যে বাজার তাতে গাড়িভাড়া, লেবার খরচসহ এক কেজি চাল তৈরিতে আমাদের খরচ হচ্ছে ৫৫ টাকা। কেজিতে আট টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে আমাদের। তারপরও আমরা লোকসান মেনে নিয়ে এ পর্যন্ত খাদ্যগুদামে ৮৪ মেট্র্রিক টন চাল দিয়েছি, আগামী রোববার আরো দেবো।
গোপালগঞ্জ জেলা চালকল মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেজবাহ উদ্দীন সিকদার বলেন, বর্তমান বাজারদরের সাথে সরকার নির্ধারিত বাজারের তারতম্য থাকায় মিলাররা চাল দিতে চাচ্ছেন না। লাইসেন্স রায় বাধ্য হয়ে লোকসান জেনেও সরকারকে চাল দিতে হচ্ছে। আমাদের যে হারে লোকসান হচ্ছে তাতে কোনো অবস্থাতেই এ লোকসান কভার করা সম্ভব হবে না।
এ প্রসঙ্গে মুকসুদপুর সিন্দিয়াঘাট খাদ্যগুদামের ওসিএলএসডি জুয়েল আহমেদ বলেন, এখন পর্যন্ত গুদামে এক ছটাক ধানও কেনা সম্ভব হয়নি। একই কথা বলেন, কোটালীপাড়া খাদ্যগুদামের ওসিএলএসডি প্রভু চন্দ্র রাজভর।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইসমাইল হোসেন বলেন, চলতি বছর এ উপজেলায় সরকারি খাদ্যগুদামে কোনো ধান কেনা সম্ভব হয়নি। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সরকারি মূল্যের চেয়ে খোলাবাজারে দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকদের সাড়া মিলছে না। তিনি বলেন, তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাল সংগ্রহের ল্যমাত্রা পূরণেরচেষ্টা চলছে।
ধান-চাল সংগ্রহের ল্যমাত্রা পূরণ না হওয়া প্রসঙ্গে গোপালগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মো: মোশারফ হোসেন বলেন, ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হয়েছে এটা বলা যাবে না। তবে ল্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এখনো ধান-চাল কেনা হচ্ছে। বাইরে বাজারে ধানের দাম সরকারি মূল্যের চেয়ে কিছুটা বেশি হওয়ায় কৃষক সরকারি গুদামে ধান দিচ্ছেন না। যদিও চাল সংগ্রহ ল্যমাত্রার কাছাকাছি রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement
এটিএম আজহারের মুক্তির দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে গণঅবস্থান করবে জামায়াত ভারত কি শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে রাজি হবে? বন্দী শিরি বিবাসের পরিবর্তে ‘গাজার এক নারীর’ লাশ দিয়েছে হামাস, দাবি নেতানিয়াহুর কালীগঞ্জে ইয়াবা ও গাজাসহ আটক ২ ভালুকায় ভেকুতে দুর্বৃত্তদের আগুন ক্লাসরুম মাতাবে প্রীতম ও ব্যান্ড লালন সীতাকুণ্ডে হত্যার পর সমুদ্রে ফেলে দেয়া জেলের লাশ উদ্ধার বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে : হামিদুর রহমান আযাদ দামুড়হুদা সীমান্ত থেকে প্রায় ৩৪ লাখ টাকার রুপা উদ্ধার চিরিরবন্দরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় এক ব্যক্তি নিহত ভাষার বইয়ের ওপর অনলাইন কন্টেন্ট ও লেকচার তৈরি করবে সরকার

সকল