২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ২১ শাবান ১৪৪৬
`

ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো পার হয়ে স্কুলে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা

ডুমুরিয়ায় ভাণ্ডারপাড়া আবাসন স্কুলের শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হচ্ছে : নয়া দিগন্ত -

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে স্কুলে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। তড়িঘড়ি করে ভদ্রা নদীর এ সাঁকো পারাপারে অনেক সময় দুর্ঘটনারও শিকার হচ্ছে শিশুরা। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ভাণ্ডারপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দৃশ্য এটি।
জানা যায়, ভদ্রা নদী পুনঃখননের পাঁচ বছর আগে ভাণ্ডারপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের কথা বিবেচনা করে এখানে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। ভাণ্ডারপাড়া ও শোভনা ইউনিয়নের সীমান্ত দিয়ে বয়ে গেছে ভদ্রা নদী। নব্বইয়ের দশকে নদী পলি ভরাট হয়ে এখন এটি সমতল ভূমিতে পরিণত হয়েছে। ভরাট নদীর বুকে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। ২০১৪ সালে ভাণ্ডারপাড়া আবাসনে প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়। ২০১৬ সালে ভদ্রা নদী পুনঃখননের উদ্যোগ নেয় সরকার। ২১ কিলোমিটার নদীর খনন কাজ শেষ হয় ২০১৯ সালে। অপরিকল্পিতভাবে নদী খনন করায় দুই পাড়ের মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এ বিদ্যালয়ে নদীর ওপার চিংড়া গ্রাম থেকে অনেক শিক্ষার্থী আসে। তারা সর্বদা ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করছে।
ভাণ্ডারপাড়া গ্রামের লুৎফর রহমান জানান, অপরিকল্পিতভাবে নদী খননের কারণে দুইপাড়ের মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। পারাপারের ব্যবস্থা না করেই নদী খনন করা হয়েছে। যার কারণে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও শ্রমজীবীরা। আশপাশে কোনো সেতু না থাকায় বিশেষ করে পণ্য পারপার নিয়েও ব্যাপক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় আশিকুল ইসলাম জানান, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো পার হয়ে প্রতিদিন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার কয়েকশ’ মানুষ দুই পারে আসা-যাওয়া করে। সাঁকোটি জরাজীর্ণ থাকায় অনেক ক্ষেত্রে গর্ভবতী নারীদের নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। তা ছাড়া ভাণ্ডারপাড়া ও শোভনা অঞ্চলটি কৃষি প্রধান এলাকা। এখানে সেতু নির্মাণের জরুরি দাবি এলাকাবাসীর।
৮ বছর আগে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি মরহুম খান আলী মুনসুরের সার্বিক প্রচেষ্টায় এবং গ্রামবাসীর অর্থায়নে ভদ্রা নদীতে ১২০ ফুট দৈর্ঘের এই বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে সাঁকোটি পারাপারের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। জোয়ারের সময় পানির চাপে নড়বড় করে, অনেক সময় ভেঙে যায় সাঁকোটি।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার জানান, সাঁকোটি পারাপারে বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। জোয়ারের পানির চাপে ইতঃপূর্বে কয়েকবার ভেঙে গেছে সাঁকোটি। পরবর্তীতে সবার সহায়তায় সংস্কার করা হয়। সম্প্রতি সাঁকোটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। জোয়ারের পানিতে বিদ্যালয়ের মাঠটিও প্লাবিত হয়। মাঠ ভরাটসহ মজবুত সাঁকো বা স্থায়ী সেতু নির্মাণের দাবি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।


আরো সংবাদ



premium cement