১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১১ শাবান ১৪৪৬
`

ফুলবাড়ীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে ইটভাটা, ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

ফুলবাড়ী উপজেলার গঙ্গারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে অনুমোদনহীন ইটভাটা : নয়া দিগন্ত -

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় একাধিক অবৈধ ইটভাটা গড়ে উঠেছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কলেজের পাশে। এসব ইটভাটার ধোঁয়া ও ধুলাবালির কারণে শিক্ষার্থীরা শ্বাসকষ্টসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছে। দূষণের ফলে শিক্ষার পরিবেশ বিঘিœত হচ্ছে এবং কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে।
বাংলাদেশের ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অমান্য করে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের ফুলবাড়ী-নাগেশ্বরী মহাসড়কের পাশে মাত্র অর্ধ কিলোমিটারের মধ্যেই গড়ে উঠেছে ডব্লিউএএইচ ব্রিকস, এবি ব্রিকস ও এমএসএইচ ব্রিকস নামের তিনটি ইটভাটা।
গঙ্গারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানায়, ‘ইট পোড়ানোর ধোঁয়ার কারণে আমরা ঠিকমতো শ্বাস নিতে পারি না। চোখ জ্বালাপোড়া করে, খেলার মাঠেও ধুলাবালি জমে থাকে। এমনকি আমাদের গাছে ঠিকমতো ফল ধরে না।
শুধু কাশিপুর নয়, শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের ফকিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেও একটি অবৈধ ইটভাটা চালু রয়েছে, যা শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ ছাড়া ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামে ‘কে এম ব্রিকস’ নামের আরেকটি অবৈধ ইটভাটা দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত হচ্ছে।
শিমুলবাড়ী ফকিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, ‘শ্রেণিকক্ষে ধুলাবালির পরিমাণ এত বেশি যে, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগ দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে।’
অন্যদিকে বড়ভিটা ইউনিয়নের নওদাবশ গ্রামের সাইফুর রহমান সরকারি কলেজের পাশেও গড়ে উঠেছে একটি ইটভাটা। কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, ‘কালো ধোঁয়া শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পড়ায় আমরা ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারি না। আমাদের স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধ ইটভাটা বন্ধের দাবি দীর্ঘদিন ধরে জানানো হলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ইটভাটাগুলোর মালিক রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসন অনেক ক্ষেত্রে নীরব ভূমিকা পালন করছে।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘অবৈধ ইটভাটা বন্ধে একবার অভিযান চালানোই যথেষ্ট নয়। এটি একটি চলমান সমস্যা, তাই নিয়মিত তদারকি ও কঠোর আইন প্রয়োগ করা দরকার।’
কুড়িগ্রাম জেলা পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, ‘পরিবেশ সুরক্ষা ও বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
এ বিষয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম বলেন, ‘আইন লঙ্ঘন করে স্থাপিত ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি পরিচালিত অভিযানে বেশ কয়েকটি ইটভাটাকে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে এবং একটি ইটভাটা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।’


আরো সংবাদ



premium cement