প্রতিবন্ধী জয় হালদার হতে চান উদ্যোক্তা
- রনী আহম্মেদ কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ)
- ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
‘আমি প্রতিবন্ধী। আমি কারো বোঝা হয়ে থাকতে চাই না। শুধু একটু সহযোগিতা পেলে আমি নিজেই একজন উদ্যোক্তা হতে চাই। আমি আমার সংসারের হাল ধরতে চাই।’ হ্যাঁ, এই কথাগুলোই বলছিলেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার রামশীল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের সুশীল হালদারের প্রতিবন্ধী ছেলে জয় হালদার (১৮)।
জন্ম থেকেই জয় হালদারের দু’টি হাত একেবারে অকেজো। তিনি কাজকর্ম করতে পারেন না। কথা বলতেও রয়েছে অনেক অস্পষ্টতা। দু’টি পা কোনো রকম চালু থাকলেও সোজা হয়ে হাঁটতেও পারেন না তিনি। কিন্তু মনের জোর তার অপরিসীম।
জয় হালদার ২০০৭ সালের মার্চ মাসের ১৩ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের পর থেকেই তিনি অনেকটা রুগ্ন এবং ক্ষীণ স্বাস্থ্যের এবং নানা প্রতিবন্ধকতায় ভুগতে থাকেন। যে কারণে জয় হালদার বেঁচে থাকবেন এমন আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলেন তার মা-বাবা। তারপরও সৃষ্টিকর্তার অপার কৃপায় বেঁচে আছেন তিনি।
জয় হালদার ছাড়াও দিনমজুর সুশীল হালদারের রয়েছে আরো একটি মেয়ে ও একটি ছেলে। গত পাঁচ-সাত বছর আগে থেকে জয় হালদার পা দিয়ে দেখাতে শুরু করেন বিভিন্ন ধরনের অসাধ্য কাজকর্ম। শুধু তাই নয়, হাতে কাজ করতে না পারলেও পা দিয়ে তিনি মোবাইল ল্যাপটপ কম্পিউটারসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ যেমন: ফটো এডিটিংয়ের কাজও তিনি করতে পারেন। কোনো লোক মোবাইল হ্যাক করলে সেটি বুঝতে পারেন এবং তাকে শনাক্ত করতে পারেন। তিনি পায়ের সাহায্যে বিভিন্ন প্রকারের আবেদনপত্র লিখতে পারেন এবং মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সব প্রকার ইউটিলিটি বিল পে করতে পারেন। অথচ তার কোনো গ্রন্থগত বিদ্যা বা কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জন করেননি।
সরেজমিন এমন চিত্রই দেখা গেল রামশীল ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের সুশীল হালদারের ছেলে জয় হালদারকে দেখে এবং তার সাথে কথা বলে।
এ বিষয়ে জয় হালদারের বাবা সুশীল হালদার বলেন, ‘কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি অথবা কোনো প্রতিষ্ঠান বা সরকার যদি আমার ছেলেকে একটা কম্পিউটার দিয়ে সহযোগিতা করতেন, তাহলে আমার ছেলে সমাজের বোঝা না হয়ে নিজেকে স্বনির্ভর করে গড়ে তুলতে পারত। জয় নিজেই বলে, আমি একজন উদ্যোক্তা হতে চাই। কিন্তু ছেলেকে একটি কম্পিউটার কিনে দেয়ার অবস্থা তো আমার নেই।’
একই এলাকার শিক্ষক অবিরাম রায় জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস অহিত একদিন জয় হালদারকে দেখতে এসেছিলেন। তিনি জয়কে সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো প্রকার সহযোগিতা পায়নি জয়। সরকারি বা বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান যদি জয়কে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতো, জয় অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারত। প্রতিবন্ধী হলেও পায়ে রয়েছে তার অলৌকিক কিছু একটা, যা দেখে আমরা বিস্মিত হই।
সবশেষে জয় হালদার বলেন, আমার একটু সহযোগিতা দরকার। আমার বিশ্বাস আমি উদ্যোক্তা হয়ে সমাজে কিছু একটা করে দেখাতে পারব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা