০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ৮ শাবান ১৪৪৬
`

ডিলারদের কারসাজিতে মেহেরপুরে সার সঙ্কট, ভোগান্তিতে কৃষক

ডিলারদের কারসাজিতে মেহেরপুরে সার সঙ্কট, ভোগান্তিতে কৃষক -

মেহেরপুরে ডিলারদের কারসাজিতে কৃত্রিম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কৃষকরা পাচ্ছেন না চাহিদা অনুযায়ী টিএসপি ও ডিএপি সার। কৃষকদের অভিযোগ, বেশি টাকা দিলেই ব্যবস্থা হয়ে যাচ্ছে সারের। সারের দাম বাড়ানোর জন্য পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছেন ডিলার ও সাব ডিলাররা। এতে দিন দিন বাড়ছে সারের মূল্য। ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন জেলার কৃষকরা।
চলতি সবজি ও বোরো মৌসুমে ধান আবাদের জমি প্রস্তুত করতে সারের চাহিদা বেড়েছে। এ সুযোগে এক দিকে চলছে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মূল্যবৃদ্ধির চেষ্টা, অপর দিকে কিছু অসাধু ডিলার কালোবাজারে সার মজুদ করছেন। প্রশাসনের অভিযানেও মিলছে সারের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরির প্রমাণ। সরেজমিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব ছাড়াই সার উত্তোলনের প্রমাণও মিলছে। মেহেরপুরের বাইরে থেকেও বেশি দামে সার বিক্রি করছে ডিলারদের এ সিন্ডিকেট।

কৃষকরা জানান, সারের সঙ্কটের কারণে তাদের ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এক কৃষক বলেন, ‘আমাদের এলাকার চাষিরা ন্যায্যমূল্যের সার তো দূরের কথা, বেশি দাম দিয়েও সার ঠিকমতো পান না।’ আরেক কৃষক জানান, ‘সার দরকার ৫-১০ বস্তার; কিন্তু পাচ্ছি মাত্র এক বস্তা। এভাবে তো চাষাবাদ করা সম্ভব না।’
সরেজমিন দেখা গেছে, অনেক ব্যবসায়ী লাইসেন্স ছাড়াই সারের ব্যবসা পরিচালনা করছেন। আবার তারা নির্দিষ্ট এলাকার কৃষকদের মধ্যে বিক্রি না করে অন্য এলাকায় অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি করছেন। এক ব্যবসায়ী জানান, ‘আমার কোনো নিজস্ব লাইসেন্স নেই, আমি অন্যদের কাছ থেকে সারের চালান কিনে বিক্রি করি।’

তবে ভিন্নমত পোষণ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) কুষ্টিয়ার কর্মকর্তা। বিএডিসির সহকারী পরিচালক মহিউদ্দীন মিয়া বলেন, ‘সার সরবরাহ ব্যবস্থা তদারকির দায়িত্ব কৃষি বিভাগের। তারা ব্যবসায়ীদের ব্যবসা-বাণিজ্য, কাগজপত্র এবং দোকান পরিদর্শন করে সঠিক নিয়মে সারের বরাদ্দ নিশ্চিত করছেন।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, সরকার জানুয়ারি মাসে মেহেরপুরের জন্য বরাদ্দ করে এক হাজার ৬১১ টন টিএসপি, এক হাজার ৬৫ টন ডিএপি এবং ২১৫ টন এমওপি সার। ব্যবসায়ীদের মতে, এ পরিমাণ চাহিদার মাত্র ৫৪ শতাংশ। একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা যেখানে বরাদ্দ চাই ১০০ শতাংশ, সেখানে আমাদের দেয়া হয় ৫৪ শতাংশ। ফলে কিছু ঘাটতি থেকেই যায়। তবে বিশেষ বরাদ্দের জন্য আবেদন করলে তখন কিছুটা সারের ব্যবস্থা হয়।’

কৃষকদের আরো অভিযোগ, সার নিতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও তারা সার পাচ্ছেন না। অথচ বেশি দাম দিলে মিলছে সার। প্রতি বস্তার জন্য যদি এক হাজার ৭০০-এক হাজার ৮০০ টাকা দাম দেয়া যায়, তাহলে দোকানদাররা ঠিকই সার দেন।
মেহেরপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) গাজী মুয়্যীদুর রহমান জানান, ‘যতবারই সারের কালোবাজারি বা অবৈধ মজুদ নিয়ে খবর পাই, আমরা তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করি।’


আরো সংবাদ



premium cement

সকল