০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪২৩১, ৬ শাবান ১৪৪৬
`

নিকলীতে বিএডিসির গভীর নলকূপ ৩৪ বছর ধরে অকার্যকর

নিকলীতে বিএডিসির পরিত্যক্ত নলকূপ : নয়া দিগন্ত -

কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার জারইতলা ইউনিয়নের আঠার বাড়িয়ায় বিএডিসির একটি গভীর নলকূপ ৩৪ বছর ধরে অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে। তদারকির অভাব থেকেই এ দুরবস্থা। নেই কোনো ফটক কিংবা দরজা। নিরাপত্তাহীন অকেজো অবস্থায় মরিচাযুক্ত অংশবিশেষ পড়ে আছে।
এরশাদ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ১৯৯০ সালে কৃষির উন্নতির লক্ষ্যে পল্লী এলাকায় উপজেলা ভিত্তিক বিএডিসির অধীনে সরকার বিনামূল্যে নগন্য সংখ্যক উন্নত গভীর নলকূপ দিয়েছিল। এ সবের মধ্যে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার জারইতলা ইউনিয়নের আঠার বাড়িয়ার কৃষকদের ভাগ্যে জুটেছিল একমাত্র সেই আধুনিক গভীর নলকূপ। আলোচনা ও প্রতিযোগিতা ছিল সেই সময়ের সাড়ে চার লাখ টাকা ব্যয় বরাদ্দের এ গভীর নলকূপ নিয়ে। উপজেলাজুড়ে প্রথম দিকে একটি মাত্র সেই উন্নত মানের গভীর নলকূপ ছিল বলে জানান তদারকির দায়িত্বে ছিলেন যারা। স্থানীয় তত্বাবধায়কের ভাষ্যমতে, এটাকে কৃষি প্রদর্শনী খামারে রূপ দেয়ার কথা থাকলেও এরশাদ সরকারের পতনের পর তা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি। নানান কারণে একটিমাত্র মৌসুম চালানোর পরেই তা চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকার বিনামূল্যে স্থানীয় রইছ উদ্দিনের মাধ্যমে সেচ মেশিনটি দিয়েছে। খরচের পরিমাণের সাথে সেখানকার কৃষকদের লাভের পরিমাণ যখনি কম হয়ে ওঠে- তখনি এ মেশিন থেকে জমিতে পানি নিতে আপত্তি তোলে কৃষকরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, মেশিন রাখার সরকারি বরাদ্দে নির্মিত পাকা ঘরের দরজাও মরিচা পরে বিনষ্ট হয়ে যায়। সেই সাথে মেশিনের যন্ত্রপাতিও বিনষ্ট হয়ে গেছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেশ কিছু যন্ত্রপাতিও খুলে নিয়ে গেছে ছিঁচকে চোরেরা।
মেশিনটির স্থানীয় তদারকির দায়িত্বে থাকা সাবেক একাধিকবারের ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় বিএনপি নেতা রইছ উদ্দিন বলেন, বিএডিসির অধীনের এই গভীর নলকূপটিকে প্রদর্শনী খামার করার কথা থাকলেও পরবর্তীতে সরকারি তদারকির অভাবে চাপা পড়ে যায়। কৃষকেরাও বিকল্প ছোট সেচ মেশিন নির্ভরশীল হয়ে ওঠে। কৃষকের ভ্রান্ত ধারণা ছিল সরকারি খরচেই পানি দেয়া যায়। এর পেছনে ডেইন নির্মাণসহ শ্রমিকদের খরচ হলেও অকার্যকরই রয়ে যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এটি অনেক আগের আর বিএডিসি নাকি বিআরডিবির অধীনে এটা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। তদারকির অভাবে সরকারি টাকার অপচয় বিষয়টির প্রসঙ্গ তিনি মন্তব্য করতে নারাজ।
বিএডিসির অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী শাওন মালাকারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এটি বিএডিসির কি না খোঁজ নিয়ে দেখবেন এবং বিএডিসির হলে পরবর্তীতে এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া যায় তা ভেবে দেখবেন বলেও জানান।
কিশোরগঞ্জের জেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ সেচ মেশিনটির বিষয়ে কথা হলে তিনি সম্পূর্ণ অবগত নন বলে স্বীকার করেন। তবে এই প্রজেক্টটির বিষয়ে অচিরেই খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলেও জানান।


আরো সংবাদ



premium cement