০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪২৩১, ৬ শাবান ১৪৪৬
`

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সরকারি টাকায় সেতু নির্মাণ

জামালপুর
জামালপুরে পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদে সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সেতু : নয়া দিগন্ত -

জামালপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের চর ভরাট করে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে বেসরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি ক্যাম্পাস। আর ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর সরকারের সাড়ে ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন একটি সেতু। জামালপুরের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সেতুটি নির্মাণ করছে।
এদিকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি নিয়ে উঠছে নানা অভিযোগ। কেউ কেউ ক্যাম্পাসের জমি নিজেদের দাবি করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়েছেন। অনেকে জমি পুনরুদ্ধারে মানববন্ধন করেছেন। আবার অনেকে বলছেন ব্রহ্মপুত্র নদের জমি দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়।
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জামালপুর শহরের বানারপাড় এলাকায় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা একটি অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করেন। পরে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য ব্রহ্মপুত্র নদের চরে নদ থেকেই ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে অর্ধশতাধিক একর জমি ভরাট করা হয়। শুরু করা হয় স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ কাজ।
জুলাই বিপ্লবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্যাম্পাসের জমি এখন নিজেদের বলে দাবি করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন অনেকে। সেই সাথে তাদের জমি ফিরে পেতে মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেন তারা। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এ পরিস্থিতিতে সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ থাকে ক্যাম্পাস নির্মাণকাজ। বর্তমানে অদৃশ্য কোনো শক্তির ইশারায় ক্যাম্পাসে নির্মাণকাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। তবে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিক নিচেই লেখা হয়েছে প্রস্তাবিত ব্রহ্মপুত্র ইন্টান্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন জানান, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধিন ক্যাম্পাসের জমি কিনে নিয়েছেন। অথচ বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য সরকারি ছয় কোটি ৪৯ লাখ ৫১ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি আরসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ৯৬ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণের জন্য ছয় কোটি ৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। পরে আরো ৪০ লাখ ছয় হাজার টাকা বৃদ্ধি করে ছয় কোটি ৪৯ লাখ ৫১ হাজার টাকা চুক্তিমূল্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরীর মালিকানাধিন চৌধুরী এন্টারপ্রাইজকে সেতুটি নির্মাণের কার্যাদেশ দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে জামালপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল ত্রিপুরার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি জামালপুরে যোগদানের আগেই সেতু বরাদ্দ হয়েছে। কাজও প্রায় সমাপ্তের পথে। এখানে আমার কোনো ভূমিকা নেই।


আরো সংবাদ



premium cement