০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১, ৫ শাবান ১৪৪৬
`

শ্যামনগরে ঘেরের বেড়িবাঁধ হিসেবে সড়ক ব্যবহার

পানিতে যাচ্ছে কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প
শ্যামনগরের সরকারি রাস্তাটি ব্যবহৃত হচ্ছে ঘেরের বেড়িবাঁধ হিসেবে : নয়া দিগন্ত -

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সরকারি রাস্তা ঘেরের বেড়িবাঁধ হিসেবে ব্যবহার করায় উপজেলার শতাধিক প্রধান ও গ্রামীণ সড়ক ধসে পড়েছে। এতে করে নির্মাণের কিছুদিনের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এসব সড়ক। সেই সাথে সড়কগুলোর ওপর দিয়ে পথচারী ও যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে পানিতে যাচ্ছে সরকারে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প। চলাচলে বাড়ছে দুর্ভোগ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রধান সড়কসহ গ্রামীণ শতাধিক পাকা ও ইটের সোলিং দেয়া সড়ক মাছের ঘেরের কারণে হুমকির মুখে পড়ছে। এর মধ্যে কাশিমাড়ি-ঘোলা খেয়াঘাট সড়কসহ সোয়ালিয়া-নূরনগর সড়ক, ঈশ্বরীপুরের সোবহান মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঝাপালি সড়ক, নকিপুর ভুলোর মোড়-নওয়াবেঁকী সড়ক, কলবাড়ি-নীলডুমুর সড়ক, নাওয়াবেকী-কলবাড়ি সড়ক, গোপালপুর সোয়ালিয়া সড়ক, মানিকখালি-রমজাননগর ফুটবল মাঠ, পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পাখিমারা-চৌদ্দরশি কেয়ার রাস্তাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পিচের পাকা সড়ক ও ইটের সোলিংয়ের সড়কগুলোর দুইপাশ বাতাসে ধেয়ে আসা ঢেউয়ে ধসে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে স্থাণীয়রা বলছেন, অপরিকল্পিতভাবে ঘের বা পুকুর কেটে মাছ চাষ করছেন চাষিরা। এসব চাষি তাদের ঘের বা পুকুরের একটি বা দু’টি পাড় হিসেবে সরকারি রাস্তা ব্যবহার করছেন। বাতাসে ঘেরের পানিতে ঢেউ সৃষ্টি হচ্ছে। এই ঢেউ আছড়ে পড়ছে সড়কের ধারে। এতে সড়কের পাড় ভেঙে পড়ছে মাছের ঘেরের ভেতর। একই সাথে ঘেরের পানিতে নিমজ্জিত থাকায় সড়কগুলোর স্থায়িত্বও দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
ঘোনা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মাছের ঘেরওয়ালাদের জন্য রাস্তা টিকছে না। মাছের ঘেরের পানির ঢেউয়ে রাস্তার মাটি, পিচ (বিটুমিন) পর্যন্ত ভেঙে রাস্তার যে অবস্থা হয়েছে তাতে কোনো যানবহন চলতে পারছে না।
যাদবপুর এলাকার কামরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সড়ককে বেড়িবাঁধ হিসেবে ব্যবহার করে বছরের পর বছর মাছ চাষ করে আসছেন এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। এতে সরকারি অর্থে নির্মিত সড়কের বিপুল ক্ষতি হচ্ছে।
শ্যামনগর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তুষার মজুমদার বলেন, সরকারি সড়ক ধসে পড়ার বিষয়টি একাধিকবার উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় উত্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, ঘের মালিকরা সড়ক অবৈধভাবে বেড়িবাঁধ হিসেবে ব্যবহার করে মাছচাষ করছে। ফলে সড়কের ঢাল ও সোল্ডারসহ পিচের রাস্তা ভেঙে পড়ছে। বিধি অনুযায়ী সড়ক থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে পৃথক বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে মাছচাষের জন্য পত্র দেয়া হলেও ঘের মালিকরা তা অমান্য করছেন।
এ বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা: রনী খাতুন বলেন, সামনের শুষ্ক মৌসুমে রাস্তা ছেড়ে ঘেরের জন্য পৃথক বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ঘের মালিকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঘের মালিকদের আউট ড্রেন রাখার জন্য বলা হয়েছে। অন্যথায় ঘেরের রেজিস্ট্রেশন দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement