মেঘনার তীব্র ভাঙন, ঝুঁকিতে বসতবাড়ি-ফসলি জমি
- সাহাদাত শাহিন ভোলা
- ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৩২
ভোলায় শীত মৌসুমেও মেঘনা নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে বসতবাড়ি, ফসলি জমিসহ বাজার। তবে ভাঙনের তীব্রতা দেখা দিলেও কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দ্রুত সিসি ব্লক দিয়ে স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ করে ভাঙন বন্ধের দাবি জানান তারা।
সরেজমিন দেখা গেছে, শীত মৌসুমেও উত্তাল মেঘনার স্রোতে ভাঙছে ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের কালিকির্তি থেকে ভোলার খাল মৎস্য ঘাট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা। গত কয়েক দিন ধরে রুদ্ররূপে মেঘনা নদী। একে একে বিলীন হচ্ছে নদীর তীরসংলগ্ন বসবাসরতদের বসতঘর, ফসলি জমি ও দোকানপাট। আর ভাঙনের অপেক্ষায় হুমকির মুখে স্লুইচ গেট বাজার ও ভোলার খাল মৎস্য ঘাটটি।
শিবপুর ইউনিয়নের ভোলার খালসংলগ্ন বেড়িবাঁধের বাসিন্দা মশুরা বেগম জানান, তারা তিনবার মেঘনার ভাঙনের শিকার হয়ে গত কয়েক বছর ধরে ভোলার খাল এলাকার বেড়িবাঁধের পাশে সরকারি জমিতে বসবাস করছেন। টাকার অভাবে জমি কিনতে পারেননি আজো। বর্তমানে ভোলার খাল এলাকায়ও মেঘনার ভাঙন শুরু হয়েছে। যদি তাদের বসতঘর ভেঙে যায়, তাহলে কোথায় গিয়ে আশ্রয় নেবেন জানেন না তিনি।
নাজমা বেগম বলেন, এখন যদি ভাঙনের শিকার হই তাহলে আমাদের খোলা আকাশের নিচে থাকতে হবে। কৃষক আব্দুর রহিম জানান, মেঘনার ভাঙনে তার জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। পাঁচ গণ্ডা জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করে কোনো রকম সংসার চালান। বর্তমানে নদী ভাঙতে ভাঙতে জমির কাছে চলে আসছে। এখন যদি ওই জমিও ভেঙে যায় তাহলে আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে। আর স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে হবে।
শিবপুরের ভোলার খালসংলগ্ন স্লুইচ গেট বাজারের ব্যবসায়ী মো: বাবুল জানান, তিনি আগে শিবপুর ইউনিয়নের আনন্দ বাজার এলাকায় ব্যবসা করতেন। নদী ভাঙনের পর তিনি স্লুইচ গেট বাজারে এসে আবারো ছোট-খাটো মুদি ব্যবসা করছেন। এ বাজার ভেঙে গেলে নতুন করে তার ব্যবসা করার মতো সামর্থ্য নেই।
স্থানীয় আল আমিন ও মো: হারুন ব্যাপারী বলেন, যখনই নদী ভাঙন শুরু হয়, তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে। কিন্তু কিছুদিন পর পানির স্রোতে ওই ব্যাগ চলে যায়। আজ পর্যন্ত স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। আমরা এবার সিসি ব্লক দ্বারা স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
শিবপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা নূর হোসেন ও ইউসুফ হোসেন সুমন বলেন, আমাদের ইউনিয়নের কালিকির্তি থেকে ভোলার খাল মৎস্য ঘাটসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত মেঘনার ভাঙন দেখা দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। যদি বর্ষার আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ঘেরাও করব।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবো-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো: জিয়া উদ্দীন আরিফ জানান, শিবপুরের দেড় কিলোমিটার এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরমধ্যে ৫০০ মিটার এলাকায় অতি ভাঙন দেখা দিয়েছে। আপাতত পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতের আওতায় প্রায় ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন। যার টেন্ডার চলমান। এতে প্রায় ১৬ হাজার জিও ব্যাগ ফেলে ৬০ মিটার এলাকা ভাঙন রোধ করতে পারবেন। বাকি এলাকার জন্যও বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে সিসি ব্লক দ্বারা স্থায়ী বাঁধ নির্মাণেরও আশ্বাস দেন তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা