৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৫
`

চিতলমারীতে টমেটোর কেজি ৩ টাকা

-

বাগেরহাটের চিতলমারীতে টমেটোর দরপতনে চাষিরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। হঠাৎ দরপতনে ক্ষেতের পাকা টমেটো নিয়ে চাষিরা এখন উদ্বিগ্ন। কারণ ক্ষেত থেকে তুলে টমেটো আড়ত (মোকাম) পর্যন্ত পৌঁছানোর কামলার মজুরি ও পরিবহন খরচ উঠছে না। চাষিরা বাজার নিয়ন্ত্রণে মধ্যস্বত্বভোগীদের দায়ী করলেও পাইকাররা জানিয়েছেন ভিন্ন কথা। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১২ টাকা কেজির টমেটো গতকাল বুধবার তিন টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। চাষিরা জানান, বাজারদর এমন চলতে থাকলে এ বছর টমেটো চাষিরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ন্যুয়ে পড়বে তাদের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড।
চিতলমারী কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় কমপক্ষে ১৬ হাজার সবজিচাষি পরিবার রয়েছে। এখানের চাষিরা এক হাজার ৫৭৬ একর জমিতে শসা, ৪৬৫ একর জমিতে করল্লা, ১৩১ একর জমিতে মিষ্টি কুমড়া, ১০৪ একর জমিতে চাল কুমড়া ও ৫৯৫ একর জমিতে অন্যান্য সবজিসহ মোট দুই হাজার ৮৭১ একর জমিতে সবজি চাষ করে থাকেন। এবার চাষিরা টমেটোসহ বিভিন্ন প্রকার সবজির চাষ করেছেন। আর বেশির ভাগ চাষই হয়েছে মাছের ঘেরের পাড়ে।
উপজেলায় দুই হাজার ৭২ একর জমিতে হাইটম, বিউটিফুল-২, বিপুল প্লাস, মেজর, বাহুবলী ও বিউটিসহ বিভিন্ন জাতের টমেটোর চাষ করা হয়েছে। তারা বিরূপ আবহাওয়াকে মোকাবেলা করে টমেটোর বাম্পার ফলন ফলিয়েছেন। আর এই বাম্পার ফলনকে ঘিরে এ উপজেলার ১৬ হাজার চাষি ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখেছিলেন। প্রথম দিকে প্রতি মণ টমেটো তিন হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বুধবার তা প্রতি কেজি তিন টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
উপজেলার দড়িউমাজুড়ি (গিরিঙ্গির) মোড়ে আড়তে বিক্রি করতে আসা সোহেব সুলতান সানু, আবুলের মোড়ের গিরিশ হালদার, নৃপেন পোদ্দারসহ অনেক চাষি বলেন, ‘এ অঞ্চলের টমেটো ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, ভোলা ও পটুয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার চাহিদা মেটায়। প্রতি বছর এখানে কয়েক লাখ টন টমেটো উৎপাদিত হয়। সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকায় মধ্যস্বত্বভোগীরা সুযোগ নিচ্ছেন।’

পাইকারি ক্রেতা লিপন মজুমদার, অনুজ রানা বলেন, এবার উৎপাদন অনেক বেশি হওয়ায় এই দরপতন। এছাড়া দাম কমের কারণে বাজারে পাইকারি ক্রেতাও কম।
চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিফাত-আল-মারুফ জানান, এ উপজেলায় এখন টমেটো উৎপাদনের মাঝামাঝি সময়। বাজারদর এমন চলতে থাকলে চাষিরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। স্থানীয় পর্যায়ে কোল্ডস্টোর থাকলে চাষিরা টমেটো সংরক্ষণ করে পরে বেশি দামে বিক্রি করতে পারতেন। যেহেতু সে ব্যবস্থা নেই। তাই চাটনি, জুস উৎপাদন কোম্পানিগুলো এগিয়ে এলে চাষিরা লাভবান হতেন।


আরো সংবাদ



premium cement