২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪ মাঘ ১৪৩১, ২৭ রজব ১৪৪৬
`

পাকনা হাওরে জলাবদ্ধতা বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কা

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার পাকনা হাওরে জলাবদ্ধতা : নয়া দিগন্ত -


সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার পাকনা হাওরের ফেনারবাঁক গ্রামের সামনের অংশে জলাবদ্ধতার কারণে হাজারো কৃষকের সারা বছরের সোনালি স্বপ্ন ডুবে আছে। হাওরে এখনো কোথায়ও হাঁটুপানি, কোথাও ঊরুপানি থাকায় বছরে একটি মাত্র ফসল বোরো ধানের চারা রোপণ করতে পারছেন না কৃষকরা।
জামালগঞ্জে বোরো ধানের সর্ববৃহৎ ভাণ্ডারখ্যাত পাকনা হাওরের অপর অংশের জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করা হলেও হাওরের অধিকাংশ এলাকা জলাবদ্ধতার কারণে হাজার হাজার কৃষক তাদের হাওরের জমিতে চারা রোপণ করতে পারছেন না। তারা জানান, গতব ছর বৈশাখ মাস শেষে কৃষকদের প্রতিবাধের মুখেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন গজারিয়া স্লুইস গেট খুলে দেয়। এতে করে সুরমা নদী থেকে পানি মিশ্রিত কাদামাটি এসে পলি পড়ে গজারিয়া স্লুইস গেটের খাল ও পাঠামারা খাল ভরাট হয়ে যায়। এ কারণে হাওরের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে বোরো আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না।
জানা যায়, পাকনা হাওরে প্রায় ১২ হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে প্রতি বছর প্রায় সাড়ে ৬৫ হাজার টন ধান উৎপাদন হয়। হাওরের পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় এবার বোরোর আবাদ করতে পারছেন না তারা। কৃষকরা জানান, গজারিয়া স্লুইস গেটের খাল ও পাঠামারা খাল খনন না করলে হাওরে এবার বোরো ফসল ফলানো সম্ভব হবে না।

সাধারণত চলতি মাঘ মাসের মাঝামাঝি সময়ের পুরোটাই ধানের আবাদ শেষ হয়ে যায়; কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে তারা অধিকাংশ জমিতেই বোরোর চারা রোপণ করতে পারছেন না। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন হাজারো কৃষক।
সরেজমিন পাকনা হাওরে দেখা গেছে, হাওরটিতে পানি নিষ্কাশনের রাস্তায় গজারিয়ায় একটি স্লুইস গেট ও পাঠামারা খালের মুখ ঢালিয়া স্লুইস গেট পর্যন্ত পলি মাটিতে ভরাট হয়ে গেছে। যার ফলে সময়মত পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় বছরের একটিমাত্র বোরো ফসলের চারা রোপণ করতে পারছেন না কৃষকরা। ধান রোপণের স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যদি ১০-১৫ দিন বিলম্ব হয়, তাহলে আগাম বন্যায় জমির বোরো পুরোটাই বিনষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী (জামালগঞ্জ অংশের) জাহিদুল ইসলাম বলেন, গজারিয়া স্লুইস গেটের মুখ থেকে পাঠামারা হয়ে ডালিয়া পর্যন্ত দ্রুত খনন করা প্রয়োজন। না হলে কৃষকদের সমস্যার সমাধান হবে না। অচিরেই এটিকে নিয়ে একটি প্রস্তাবনা জেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। জেলা কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান, পাকনা হাওরের পানি অপসারণ করা প্রয়োজন। না হলে বোরো আবাদ ব্যাহত হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, কয়েকটি হাওরে পানি নিষ্কাশনের জন্য আমরা কাজ করছি। যেখানে খনন করে পানি অপসারণ করা প্রয়োজন সেখানে প্রকল্প হাতে নিয়ে খননের উদ্যোগ নিচ্ছি।


আরো সংবাদ



premium cement