লবণের দরপতনে হতাশ কক্সবাজারের চাষিরা
লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা- রফিক আহমদ চকরিয়া (কক্সবাজার)
- ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
লবণ মৌসুমের শুরতেই কক্সবাজারের লবণ চাষিরা কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। শুরতেই লবণের দফায় দফায় দরপতনে চাষিরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। প্রভাবশালী মিল মালিক সিন্ডিকেটের কারণে চাষিরা লবণের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। দেশীয় এ শিল্পকে টিকিয়ে না রাখলে পরনির্ভরশীল হয়ে পড়তে হবে বলে মনে করেন লবণ চাষিরা।
উৎপাদনকারী লবণচাষিরা মনে করেন চাষের শুরুতেই লবণের দাম কমিয়ে দেশীয় লবণ শিল্পকে ধ্বংস করে বিদেশ থেকে লবণ আমদানির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এ জেলার লবণ শিল্পের সাথে বিভিন্নভাবে জড়িত প্রান্তিক চাষিসহ দুই লক্ষাধিক শ্রমিক।
চকরিয়া মাতামুহুরি বিএনপির সভাপতি জামিল ইব্রাহিম জানান, চলতি মৌসুমের শুরুতে (১৫ নভেম্বর থেকে ১৫ মে পর্যন্ত) উপকূলীয় ৭ উপজেলার চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, টেকনাফ, ঈদগাঁও ও কক্সবাজার সদরের ৬৬ হাজার একর জমিতে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যে চাষিরা মাঠে নামেন। এ সব এলাকায় উৎপাদিত লবণ দেশের চাহিদার নব্বই শতাংশ পূরণ করে আসছে।
কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় গত ২-৩ মৌসুমে লবণের ন্যায্য মূল্য পেয়ে চলতি মৌসুমে চাষিরা অধির আগ্রহ নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন। আবহাওয়া লবণ চাষের অনুকূলে থাকায় এবারও গত মৌসুমের তুলনায় অধিক পরিমাণে লবণ উৎপাদন হবে বলে মনে করেন লবণ চাষিরা।
বিসিকের এক তথ্যে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার উপকূলীয় ৭ উপজেলায় ৬৬ হাজার একর জমিতে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ লাখ টন। জানা যায়, গত বছর লবণ মৌসুমে ওই পরিমাণ জমিতে লবণ উৎপাদন হয়েছিল ২৪ লাখ ৩৭ হাজার ৮৯০ টন।
লবণ চাষি ও ব্যবসায়ী সংগ্রহ পরিষদের সদস্যসচিব মিজানুর রহমান চৌধুরী জানান, খুলনা, নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের কিছু মিল মালিক সিন্ডিকেট করে উৎপাদিত লবণের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। মৌসুমের শুরুতে উৎপাদিত লবণ ৮৫ কেজিতে দুই মণ হিসাবে প্রতি বস্তা ১৪০০ টাকায় বিক্রি করেন। এ দাম দফায় দফায় কমিয়ে বর্তমানে সে লবণ বিক্রি করা হচ্ছে ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকায়। আবার বস্তা প্রতি ওজনে প্রতি বস্তায় ১০ থেকে ১৫ কেজি করে অতিরিক্ত দিতে হয় বলে চাষিরা জানান। যার ফলে লবণ চাষিরা উৎপাদনের শুরুতেই লোকসানের ধাক্কা খেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন।
ঈদগাঁও উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়নের ভারোয়াখালীর লবণ চাষি রবিনের সাথে সরেজমিনে লবণের উৎপাদন এলাকা পরিদর্শনকালে তিনি জানান, চলতি মৌসুমে সে একা প্রায় ছয় একর জমিতে লবণ উৎপাদন শুরু করেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি লবণ উৎপাদন ১৫ টাকা খরচ হলেও মাঠ পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৭-৮ টাকায়। অথচ বাজারে প্যাকেটজাত লবণ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি। এ লোকসানের ফলে চাষিরা লবণ উৎপাদনের আগ্রহ হারাতে বসেছে।
দেশীয় এ শিল্পকে সিন্ডিকেটের হাত থেকে রক্ষা করে চাষিদের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণে জরুরি পদক্ষেপ না নিলে লবণ চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়বে এবং বিদেশ থেকে লবণ আমদানির সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন অভিজ্ঞ মহল।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা