ভার্মি কম্পোস্ট ও কেঁচো বিক্রি করে স্বাবলম্বী মজনু
- সঞ্জয় ব্যানার্জী দশমিনা (পটুয়াখালী)
- ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) উৎপাদন এবং কেঁচো বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা মো: মজনু প্যাদা। তিনি পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহযোগিতায় দু’টি হাউজ ও দু’টি রিং স্লøাব দিয়ে তিনি শুরু করেন ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন ও বাণিজ্যিকভাবে কেঁচো বিক্রি। ধীরে ধীরে সার উৎপাদনের পরিধি বাড়িয়েছেন মজনু প্যাদা। বাড়ির পাশে টিনের শেড ও দোচালা পলিথিনের ঘরে দু’টি হাউজ ও দু’টি রিং স্থাপন করে বাণিজ্যিকভাবে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন ও কেঁচো বিক্রি শুরু করছেন। প্রতি মাসে ভার্মি কম্পোস্ট সার ও কেঁচো বিক্রি করে মজনু প্যাদা আয় করেন ২৫-৩০ হাজার টাকা।
কৃষি উদ্যোক্তা মজনু প্যাদার ভার্মি কম্পোস্ট সারের প্লান্ট ও কেঁচো উৎপাদনের প্লান্ট ঘুরে দেখা যায়, সার তৈরির জন্য স্থাপন করা প্রতিটি হাউজে ৩-৪ মণ গোবর, শাকসবজির উচ্ছিষ্ট ও কলাগাছের টুকরার মিশ্রণ তৈরি করে প্রতিটি রিংয়ে ৯ কেজি কেঁচো ছেড়ে দেয়া হয়। তারপর চটের বস্তা দিয়ে রিং ঢেকে রাখা হয়। এভাবে এক মাস ঢেকে রাখার পর তৈরি হয় ভার্মি কম্পোস্ট সার।
ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনের খরচ এবং লাভের বিষয় জানতে চাইলে মজনু প্যাদা বলেন, হাউজ ও রিং স্লøাব এবং ঘর নির্মাণসহ শুরুতে প্রায় ১৩ হাজার টাকা খরচ হয়। চাহিদা বাড়ায় আরো ৩০ হাজার টাকা খরচ করে হাউজ তৈরি করি। মাসে উৎপাদন হয় দুইটন কেঁচো সার। প্রতি কেজি সার ১১ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। পাশাপাশি প্রতি কেজি কেঁচো ৯ শ’ টাকা থেকে ১১ শ’ টাকা দরে বিক্রি করি। কেঁচো সার উৎপাদন করে নিজের চাহিদা পূরণ ও বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করে আসছি। বাড়তি কেঁচো এবং সার বিক্রি করে মাসে ১২- ১৫ হাজার টাকা আয় হয় আমার।
উপজেলা কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদফতরসূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালীর দশমিন উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে কমিউনিটি বেইজড কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০২০-২১, ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কৃষকদের জন্য ভার্মি কম্পোস্ট সার ও কেঁচো উৎপাদন প্রদর্শনী করা হয়। প্রদর্শনীর আওতায় ঘর নির্মাণের জন্য টিন, খুঁটি, রিং ও কেঁচো দেয়া হয়েছে। উপজেলায় সরকারি ও নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় অর্ধ শতাধিক কৃষক ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন ও কেঁচো বিক্রি করে আসছেন। এ ছাড়া ৭০-৮০ জন কৃষক বাণিজ্যিকভাবে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন ও কেঁচো বিক্রি করছেন।
এদিকে মজনু প্যাদার উৎপাদিত কেঁচো সার স্থানীয় কৃষকদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে চাষিরা এসে তার বাড়ি থেকে সার কিনে নিয়ে চাষাবাদ করছেন।
গছানী গ্রামের কৃষক কাজী সরোয়ার হোসেন জানান, মজনু প্যাদার ভার্মি কম্পোস্ট সার ফসলে ব্যবহার করে ভালো ফলন পেয়েছি। আমার মতো অনেকেই এখন চাষাবাদে ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহার করছেন। এতে রাসায়নিক সারের তুলনায় খরচ কম, উৎপাদন বেশি হয়।
ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনের বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জাফর আহমেদ বলেন, পরিবেশবান্ধব ভার্মি কম্পোস্ট সার মাটির স্বাস্থ্যরক্ষা ও মাটির উর্বরতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমেছে। ভার্মি কম্পোস্ট সারের উৎপাদন বাড়াতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে কৃষি উদ্যোক্তাদের সার্বিক সহযোগিতা ও দিকনির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা