২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯ মাঘ ১৪৩১, ২২ রজব ১৪৪৬
`
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

র‌্যাগিংয়ের নামে জুনিয়রদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন

অভিযুক্তদের নামে শোকজ
-

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৭তম আবর্তনের সিনিয়র কর্তৃক ১৮তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ৩০ জন শিক্ষার্থী র‌্যাগিংয়ের বিচার চেয়ে প্রক্টর বরাবর একটি অভিযোগপত্র জমা দেন।
এতে বলা হয়, আমরা ১৮তম আবর্তনের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। বিভাগের ১৭তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা আমাদেরকে ‘চেইন অব কমান্ড’ ও ‘ভার্সিটির কালচার’ শেখানোর নামে অমানুষিক নির্যাতন করেন। ম্যানার শেখানোর নামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমাদেরকে আটকে রাখা হয়। কারোর অসুস্থতা বা কোনো অসুবিধা বিবেচনা করা হয় না। ছেলেদেরকে রাতে বঙ্গবন্ধু হলের ৪১৬ ও ৮২৪ নম্বর কক্ষে ও জঙ্গলবাড়িতে নিয়ে হেনস্তা করে এবং ভোরে ছেড়ে দেয়া হয়।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত আমাদের ব্যাচের ৩২ জন শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে আমাদের ওপর মানসিক অত্যাচার করা হয়। যার ফলে সেখানে উপস্থিত দুইজন মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসব কাজে জড়িত উল্লেখযোগ্য সিনিয়দের নামগুলো হলো : আশরাফ, মাসুম, ইমরান, জিসান, মারুফ, নিঝুম, তামান্না, ডানা, জীম, ফারিহা, পুনম, অর্পিতা ও লিজা তালুকদার।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, জেলাসহ সিনিয়রদের নাম মুখস্থ করতে বলা হয়। ছেলেদেরকে নারী সিনিয়রদের ফোন নাম্বার দিয়ে জোর করে প্রপোজ ও কুপ্রস্তাব দেয়ানো হয়। এ ছাড়া নানাভাবে মেয়েদেরকে হেনস্তা করা হয়। এমনকি অকথ্য ভাষায় গালি দেয়া হয় আমাদেরকে। এসব কারণে আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী শিক্ষার্থী জানান, আমাদেরকে সিনিয়ররা ডেকে রাত ৯টা থেকে ১০ পর্যন্ত আটকে রেখে মানসিক নির্যাতন করেন। দাঁড় করিয়ে অপমান ও নানান ইঙ্গিতে অসম্মান করা হয়।
এ বিষয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাসুদুর রহমান জানান, বিভাগ থেকে ইতোমধ্যে অভিযুক্তদেরকে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে। এর পর ভুক্তভোগীদের উত্থাপিত দাবিগুলো বাস্তবায়নে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা রাতে এ রকম একটি অভিযোগ পেয়েছি। প্রক্টর অফিস থেকেও অভিযুক্তদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ জানুয়ারি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ১৩ শিক্ষার্থীকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে কেন তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে না সে বিষয়ে শোকজ করা হয়েছে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement