চৌগাছায় বিদ্যালয়ের দুই পাশে ৩ ইটভাটা
- এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর)
- ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
যশোরের চৌগাছা উপজেলার কমলাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুই পাশে ফসলি জমিতে তিনটি ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে ইট। আর এ ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় ব্যাপক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। দেখার যেন কেউ নেই। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ১৫টি ইট ভাটা রয়েছে। যার মধ্যে বেশির ভাগ ইট ভাটার লাইসেন্স নেই। অনুমতিবিহীন এ সব ভাটায় সার্বক্ষণিক ইট পোড়ানো হচ্ছে। পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র না পেলেও রহস্যজনকভাবে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ভাটাগুলোতে পোড়ানো হচ্ছে ইট। ফলে ভাটার কালো ধোঁয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও জনসাধারণ। তা ছাড়া হুমকির মুখে পড়েছে ফসলি জমি ও প্রাকৃতিক পরিবেশ।
সরেজমিনে উপজেলার স্বরূপদাহ ইউনিয়নের দেবালয় (কমলাপুর মোড়) এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কমলাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উত্তর, পশ্চিম ও পূর্ব পাশ ঘেঁষে রয়েছে ৩টি ইট ভাটা। এ ভাটা ৩টির একটিরও লাইসেন্স নেই। চিমনি দিয়ে প্রচণ্ড বেগে বের হচ্ছে ধোঁয়া। এ দিকে উপজেলার প্রতিটি ইট ভাটা সরকারি সড়ক ঘেঁষে ও দীর্ঘদিন ধরে ফসলি জমিতে পরিচালিত হয়ে আসছে। কোনো কোনো ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ফলে উজাড় হচ্ছে খেজুর গাছসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ।
কমলাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আলিম বলেন, স্কুলের গা ঘেঁষে তিন পাশে তিনটি ইট ভাটা। বেপরোয়াভাবে ভাটার ট্রাক চলায় ব্যাপক ধুলাবালুতে শ্রেণিকক্ষসহ চার পাশ ময়লায় ভরে যায়। এ ছাড়া ভাটার কালো ধোঁয়ায় শিক্ষার্থীসহ জনসাধারণের স্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নে চৌগাছা-কোটচাদপুর সড়ক ঘেঁষে, নারায়ণপুর ইউনিয়নে চৌগাছা-মহেশপুর সড়ক ঘেঁষে ও স্বরূপদাহ ইউনিয়নে চৌগাছা-পুড়াপাড়া সড়ক ঘেঁষে একাধিক ইট ভাটা রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ইট ভাটা মালিক জানান, এ উপজেলায় কোনো ভাটারই লাইসেন্স নবায়ন নেই। কিভাবে চলে প্রশ্ন করা হলে তারা জানান, জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ থেকে শুরু করে প্রতিটি সেক্টর ম্যানেজ করেই ভাটা চালানো হয়ে থাকে। আর এসব ম্যানেজ করে থাকেন উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতি।
দেওয়ান ব্রিক্সের মালিক ও ভাটা সমিতির সভাপতি দেওয়ান তৌহিদুর রহমান বলেন, এ উপজেলায় ১৫টি ইটভাটা রয়েছে। দু-একটি ছাড়া কোনোটারই লাইসেন্স নবায়ন নেই। আমরা লাইসেন্স নবায়নের জন্য যশোর পরিবেশ অধিদফতরে সব কাগজপত্রাদি জমা দিয়েছি। পরিবেশ অধিদফতর ভাটার লাইসেন্স নবায়ন বন্ধ করে রেখেছে। তবে প্রতিটি ভাটা মালিক তাদের আয়কর, ভাটার ভ্যাট ও ট্যাক্স সরকারি চালানের মাধ্যমে সরকারের ঘরে জমা দিচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হুসাইন বলেন, ইট ভাটায় ফসলি জমির টপসয়েল কেটে নেয়ায় জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ফসলি জমি বন্ধ্যা হয়ে পড়বে।
উপজেলা সরকারি মডেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা: আল-ইমরান বলেন, ভাটার কালো ধোঁয়ার ভারী শিষায় মানবদেহে এজমা, হাঁফানি, সিওপিডি ও ফুসফুসে মারাত্মক ক্ষয়ব্যাধি বাসা বাঁধতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা বলেন, আমার জানা মতে এ উপজেলায় দু-একটি ভাটার কেবল লাইসেন্স নবায়ন আছে বাকি ভাটাগুলোর নেই।
যশোর পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী উপ-পরিচালক জানান, চৌগাছা উপজেলায় যেসব ইট ভাটার পরিবেশের ছাড়পত্র নেই, অভিযানের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে অচিরেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা