স্বাস্থ্যঝুঁকির পরও ফুলবাড়িতে বাড়ছে তামাক চাষ
- জাকারিয়া শেখ ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম)
- ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলায় তামাক চাষের পরিমাণ উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং পরিবেশের জন্য বিপর্যয়কর প্রভাব থাকা সত্ত্বেও অধিক লাভের আশায় কৃষকরা দিন দিন তামাক চাষে ঝুঁকছেন। ধান ও শীতকালীন সবজির মতো প্রচলিত ফসলের জায়গায় এ ক্ষতিকর ফসল চাষের প্রবণতা বাড়ছে।
উপজেলার ধনিরাম গ্রামের কৃষক বিকাশ চন্দ্র জানান, তামাক চাষে সাধারণ ফসলের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি আয় হয়। গত শীত মৌসুমে শীতকালীন সবজির চাষে লোকসানের পর তামাক চাষে যেতে বাধ্য হয়েছি।
একই গ্রামের আরেক কৃষক বলেন, তামাক চাষ যে স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর, তা আমরা জানি। কিন্তু কোম্পানির কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা এবং অগ্রিম অর্থ পাওয়ায় এটি আমাদের জন্য সহজ সমাধান।
তামাক চাষ শুধু মাটি এবং পরিবেশ নয়, বরং মানুষের স্বাস্থ্যের ওপরও মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। রাবাইতারী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক (কৃষি) আমিনুল ইসলাম বলেন, তামাক চাষের কারণে মাটির উর্বরতা কমে যাচ্ছে। এটি জলবায়ুর জন্যও ক্ষতিকর। কিন্তু সিগারেট কোম্পানিগুলো কৃষকদের আর্থিক প্রলোভন দেখিয়ে তামাক চাষে আকৃষ্ট করছে।
তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসন এবং পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছে। তারা মনে করে, টেকসই কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এবং পরিবেশ রক্ষায় কৃষকদের বিকল্প আয়ের পথ তৈরি করা জরুরি।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তামাক চাষের ক্ষতিকর দিক নিয়ে ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আর্থিক প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষকদের বিকল্প ফসল চাষে উৎসাহিত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি, সরকারকে সিগারেট কোম্পানিগুলোর প্রভাব নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিতে হবে।
ফুলবাড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন জানান, তামাক চাষের ফলে মাটির উর্বরতা কমছে এবং এর ক্ষতিকর প্রভাব ভবিষ্যতে আরো ভয়াবহ হতে পারে। আমরা চেষ্টা করছি কৃষকদের সচেতন এবং বিকল্প ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ করতে। তামাক চাষ বৃদ্ধির পেছনে বিভিন্ন সিগারেট কোম্পানির আর্থিক প্রলোভনের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। এই কোম্পানিগুলো অগ্রিম টাকা, সার এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে কৃষকদের তামাক চাষে উদ্বুদ্ধ করছে। ফলে কৃষকরা শীতকালীন সবজি এবং ধানের মতো টেকসই ফসলের চাষ কমিয়ে তামাক চাষে ঝুঁকছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা