১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪ মাঘ ১৪৩১, ১৭ রজব ১৪৪৬
`

মুলাদীতে খনন হচ্ছে নয়া ভাঙনি নদী, দুর্ভোগ লাঘবের আশা

মুলাদী উপজেলার বন্দর ব্রিজের কাছে নয়া ভাঙনি নদীতে ড্রেজিংয়ের প্রস্তুতি চলছে : নয়া দিগন্ত -

এক সময়ের খরস্রোতা নয়া ভাঙনি নদীর অস্তিত্ব আজ বিপন্নপ্রায়। নদীর মাঝখানে জেগে ওঠা চরে চাষ হচ্ছে ইরি-বোরো ধানসহ নানা ধরনের ফসল। কৃষকরা অনায়াসে হেঁটেই পার হচ্ছেন নদী। নদীর নাব্যতা হারানোর কারণে শুকনো মৌসুমে ওই এলাকায় কৃষি উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া বন্যা, অতিবর্ষণে এ অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বরিশাল সদর উপজেলার কীর্তনখোলা নদীর শেষাংশ থেকে নয়া ভাঙনি নদীর শুরু। বরিশাল সদর, মেহেন্দিগঞ্জ, হিজলা ও মুলাদী উপজেলার বুক চিড়ে নয়া ভাঙনি নদী মেঘনায় গিয়ে মিলেছে। নয়া ভাঙনি নদীর তীর ঘেঁষে রয়েছে এক সময়ের বরিশালের নামকরা ব্যবসাকেন্দ্র মুলাদী ও খাশের হাট বন্দর। এখান থেকে বছরে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব পেয়ে থাকে। এ ব্যবসা কেন্দ্রের ওপর ভিত্তি করে লাখ লাখ মানুষের জীবিকা নির্ভর করে। কিন্তু মাঝে মাঝে চর জেগে ওঠায় ছোট ট্রলারও আটকে পড়ে।

এক সময় নদীবন্দর বরিশালের সাথে রাজধানী ঢাকার সহজ নৌ-যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো আড়িয়াল খাঁ, নয়া ভাঙনি , ছৈলা ও জয়ন্তী নদী। চলতো পালতোলা নৌকা, স্টিমার, লঞ্চসহ বিভিন্ন নৌযান। কিন্তু এসব এখন শুধু স্মৃতি।
বিচ্ছিন্ন এসব এলাকার মানুষের প্রধান আয়ের উৎস কৃষিজাত পণ্য। এ অঞ্চলের বাণিজ্যকেন্দ্রের মধ্যে মুলাদী বন্দর, খাশের হাট, প্যাদার হাট, চরপদ্মার হাট ও শৌলা বাজার অন্যতম। দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা অপেক্ষাকৃত কমদামে এ অঞ্চল থেকে ধান পাট, ডাল, তিল, মরিচ, পান ও সুপারিসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য কিনে নৌযান বোঝাই করে অন্যত্র নিয়ে বিক্রি করতেন। কাঠ বাজারের জন্য মুলাদী বাজারের নাম রয়েছে বরিশাল অঞ্চলসহ সারা দেশে। সব মিলিয়ে নদীর নাব্যতা হারানো এ অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের আয়ের উৎস সঙ্কুচিত হয়ে গেছে।

নদীর মধ্যে একাধিক ডুবোচর জেগে ওঠায় ও নদীতে পানি কম থাকায় ঢাকা থেকে মুলাদী আসার বড় লঞ্চগুলো যাত্রী নিয়ে থেমে যায় শৌলা লঞ্চঘাট। সেখান থেকে আলাদা ভাড়া দিয়ে ট্রলারে আসতে হয় যাত্রীদের গন্তব্যস্থলে। আর মুলাদী থেকে ঢাকা যেতে হলে যাত্রীদের আট মাইল নদী ট্রলারে করে শৌলা গিয়ে লঞ্চে উঠতে হয়। তাতে জনপ্রতি ৫০ টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়।
নয়া ভাঙনি নদীর গাছুয়া ইউনিয়নের আকন বাজার রাস্তার মাথা, পৈক্ষা নমরহাট, সুইজ গেট ও কিলেরহাট এলাকার নদী ড্রেজিং করলেই নিরাপদে চালু হতে পারে ঢাকা-মুলাদী নৌ যোগাযোগ।
এ সমস্যার কথাগুলো নয়া দিগন্তে কয়েকবার সংবাদ প্রকাশের এক পর্যায়ে প্রশাসনের টনক নড়েছে। সিএসডি শাহারাস্তি ড্রেসারের সুপার ভাইজার মো: মনির হোসেন বলেন, বিআইডব্লিউটিএ মাধ্যমে হরিনাথপুর থেকে মুলাদী বন্দর ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার নয়া ভাঙনি নদীর সাতটি স্থানে ড্রেজিং-এর কাজ চলবে। এ ড্রেজিং-এর মাধ্যমে লঞ্চ চলাচল সহজ হয়ে যাবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement