নড়াইলে পাওনা টাকা আদায় করতে গিয়ে বিপাকে কৃষক

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার চরবালিদিয়া গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক কাবির মুসল্লি (৭৫) গরু বিক্রির পাওনা টাকা আদায় করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন। গত কোরবানির ঈদে ৯৫ হাজার টাকায় একটি ষাঁড় কেনেন চরবালিদিয়া গ্রামের জামাই ফরিদপুরের গরু ব্যবসায়ী লাবলু মোল্যা। ষাঁড়টি কেনার সময় গরুর মালিককে মাত্র ১০ হাজার টাকা দেন লাবলু। বাকি ৮৫ হাজার টাকা পরিশোধে আজ না কাল করতে থাকেন তিনি (লাবলু)।
ভুক্তভোগীসহ গ্রামবাসী জানান, দীর্ঘদিনেও গরু ব্যবসায়ী লাবলু কাবির মুসল্লির টাকা পরিশোধ না করায় দুশ্চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর গত ১০ ডিসেম্বর গরু ব্যবসায়ী লাবলু মাইজপাড়া হাটে গরু কিনতে আসার পথিমধ্যে কালিনগর এলাকা থেকে কাবির মুসল্লির পরিবার লাবলুকে শিকল বেঁধে আটকে রেখে লাবলুর কাছে থাকা ৩ লাখ ৭০ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার দাবি করেন তার পরিবার।
ফরিদ মোল্যাসহ গ্রামের অনেকে জানান, লাবলু কাবির মুসল্লির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেনে, তা ডাহা মিথ্যা। বরং দীর্ঘদিন গরু বিক্রির ৮৫ হাজার টাকা না পেয়ে হতাশ হয়ে কাবির মুসল্লি দুইবার স্ট্রোক করেছেন। কাবির মুসল্লি বলেন, গত কোরবানির ঈদে লাবলুর কাছে গরু বিক্রি করেছি। অনেকবার টাকা চাওয়ার পরও দেয়নি। আমি গরিব মানুষ। আমার এক মেয়ে প্রতিবন্ধী। তবুও ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে টালবাহানাসহ উল্টো হয়রানি করছে আমাদের।
চরবালিদিয়া গ্রামের রাজু মুন্সী বলেন, লাবলুকে আটক করা হলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরামর্শ দেন, তাকে বেঁধে রাখার জন্য। এরপর নলদী পুলিশ ফাঁড়িকে জানানো হলে ফাঁড়ি ইনচার্জ মুরসালিন বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের পরামর্শ দেন। পরে গত শনিবার লাবলু মোল্যাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়।
এ দিকে ঘটনার দিন গত শুক্রবার ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, গরু ব্যবসায়ী লাবলুকে আটকানো পর তিনি জানান, তার কাছে কোনো টাকা-পয়সা নেই। এ ছাড়া দীর্ঘদিনেও ৮৫ হাজার টাকা পরিশোধ করতে পারেননি বলে স্বীকার করেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করে লাবলুসহ তার পরিবারের করা অভিযোগ ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়ার ভিডিওচিত্রে কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
লোহাগড়া থানার ওসি আশিকুর রহমান জানান, দুই পক্ষের অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।