১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০২ মাঘ ১৪৩১, ১৫ রজব ১৪৪৬
`
যশোরের সাতমাইল গরুর হাট

৪ মাসে সাড়ে ৩ কোটি টাকা সিন্ডিকেটের পকেটে

-

- কৌশলে ইজারা দেয়া হচ্ছে না
- ৫ আগস্টের পর দখলদারিত্বের হাতবদল

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ গরুর হাট যশোরের বাগআঁচড়ার সাতমাইল। এই হাটটি ঘিরে এখন লুটপাট চলছে। কৌশলে ইজারা বন্ধ করে দিয়ে জাহাঙ্গীর মেম্বার নামে এক ব্যক্তির নেতৃত্বে গত সাড়ে চার মাসে আনুমানিক সাড়ে তিন কোটি টাকার মতো লুটে নেয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনও এ বিষয়ে নির্বিকার। ফলে জাহাঙ্গীর মেম্বারের নেতৃত্বাধীন সিন্ডিকেট বাধাহীনভাবে লুটপাট চালাচ্ছে। গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পরপরই সাতমাইল গরুর হাটের দখল নেয় ওই সিন্ডিকেট। এরপর শার্শার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে চাপে ফেলে তারা হাট থেকে আদায় শুরু করে। আদায়ের খুব সামান্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দিতো বলে সূত্র জানিয়েছে।
সাতমাইল গরুর হাটটি সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার বসে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রতি হাটে গড়ে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা আদায় হয়। সেই হিসেবে ৫ আগস্টের পর এ পর্যন্ত ৩৬ দিনের হাট থেকে তিন কোটি ৬০ লাখ টাকার মতো সংগ্রহ করেছেন জাহাঙ্গীর সিন্ডিকেট। ইতঃপূর্বে যারাই জাহাঙ্গীর সিন্ডিকেটের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ে মুখ খুলেছে তাদেরকেই ম্যানেজ করেছেন তিনি। তারই কারসাজিতে পদ্মার এপারের সর্ববৃহৎ গরুর হাটটি ইজারা দিচ্ছে না উপজেলা প্রশাসন।
সূত্র বলছে, উপজেলা প্রশাসনকেও ম্যানেজ করে ফেলেছে জাহাঙ্গীর। যে কারণে নানা অজুহাতে ইজারা দেয়া হচ্ছে না। আবার অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদও করছে না উপজেলা প্রশাসন। প্রশ্ন, বৃহৎ এই গরুর হাটটি ইজরারাবিহীন আর কতকাল চলবে?
স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘জাহাঙ্গীর দুর্ধর্ষ প্রকৃতির লোক। তার কর্মকাণ্ড নিয়ে কেউ ভয়ে কথা বলতে চায় না। এমনকি প্রশাসন ইজারা দিতে চাইলে কেউই যাতে অংশগ্রহণ না করে সেই চেষ্টা করেন জাহাঙ্গীর মেম্বার।’
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর মেম্বারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মিলেমিশে হাট কালেকশনে উপজেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা করি। প্রশাসনের লোকজনের উপস্থিতিতে আমাদের লোকজন সহযোগিতা করে।’ এত লোক থাকতে আপনারা কেন সহযোগিতা করতে যাচ্ছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দল মিলেমিশি করছি আমরা।’
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী নাজিব হাসান বলেন, ‘আগের ইউএনও মহোদয় যেভাবে করে গেছেন আমিও সেভাবেই রেখেছি। তাছাড়া আগে একবার ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেছি। কেউ দরপত্র জমা দেয়নি। আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে আবারো ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে। দরপত্র জমা পড়লে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইজারা নিয়ে যাতে বৃহৎ এই পশুহাট পরিচালনা করা হয় সেজন্য সবাইকে বলা হচ্ছে।’

 

 


আরো সংবাদ



premium cement