লালমনিরহাটে রিট পিটিশনে চলছে ৩৬টি অবৈধ ইটভাটা
- আসাদুল ইসলাম সবুজ লালমনিরহাট
- ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:২১
লালমিনরহাটে সচল রয়েছে ৫৫টি ইটভাটা। লাইসেন্সের মেয়াদ ও পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র নেই। রিট পিটিশন মামলায় চলছে ৩৬টি অবৈধ ইটভাটা। চলতি ইট উৎপাদনের মৌসুমে এসব ভাটায় দেদার সরবরাহ করা হচ্ছে কৃষিজমির মাটি। দুই-তিন ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি (টপ সয়েল) কেটে নেয়া হচ্ছে ইটভাটায়। এতে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যও হুমকির মুখে পড়ছে। পরিবেশ আইন অনুযায়ী, কৃষিজমি ও টিলার মাটি কাটা দণ্ডনীয় অপরাধ।
জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলায় মোট ৫৫টি ইটভাটা রয়েছে। তার মধ্যে অনুমোদনপ্রাপ্ত ইটভাটার সংখ্যা মাত্র ১৯টি। বাকি ৩৬টি ইটভাট অবৈধ। অনেক ভাটার লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র না নিয়েই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এসব ইটভাটা হলো লালমনিরহাট জেলা সদর উপজেলায় ৫টি। আদিতমারী উপজেলায় ১০টি। কালীগঞ্জ উপজেলায় ৮টি। হাতীবান্ধা উপজেলায় ১২টি এবং অবৈধ ও পাটগ্রাম উপজেলায় ৪টি ভাটার মধ্যে ১টি অবৈধ।
জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলায় ৫৫টি ইটভাটার মধ্যে ৩৬টি ভাটা দীর্ঘদিন ধরে রীট পিটিশনের নামে চালু রয়েছে। নেই কোনো পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদনও। ফলে বিপুল পরিমাণে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। পাশাপাশি পরিবেশ ও কৃষিজমির ক্ষতি হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে রয়েছে উদাসীনতার অভিযোগ। রাজনৈতিক ও আর্থিক প্রভাব খাটিয়ে মালিকরা নিয়মিত এ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ইটভাটার কালো ধোঁয়া পরিবেশ দূষণ করছে। এসব অবৈধ ইটভাটা সাধারণ জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে বিঘিœত করছে। পাশাপাশি ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে।
কৃষিবিদদের মতে, জমির উপরিভাগের চার থেকে ছয় ইঞ্চি গভীরের মাটিতেই মূল পুষ্টিগুণ থাকে। মাটির এই স্তর কেটে নেয়া ফলে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করেও কাক্সিক্ষত ফলন পাওয়া যায় না। এতে সারের পেছনে কৃষকের অতিরিক্ত খরচ করতে হয়।
কৃষক মিনহাজ উদ্দিন (৫৫) বলেন, এলাকার কৃষিজমিগুলো এক ফসলি। যে কারণে কৃষকরা অনেক সময় জমির মাটি বিক্রি করে দেন। মাটির মূল্য একেক জায়গায় একেক রকম হয়। তিনি সম্প্রতি ২৮ শতক জমির মাটি আট হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।
স্থানীয় এক ইটভাটার মালিক জানান, কৃষিজমি থেকে মাটি নিয়ে ইট প্রস্তুত করার কোনো নিয়ম নেই। তবে সরকার যেসব জায়গা থেকে মাটি নেয়ার দিকনির্দেশনা দিয়েছে, সেখান থেকে মাটি আনতে অনেক খরচ পড়ে। এতে ইট বিক্রি করে তাদের কোনো লাভ থাকে না।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রাকিব হায়দার বলেন, অবৈধ ইটভাটাগুলো শুধু পরিবেশ ও কৃষি জমির জন্য ক্ষতিকর নয়, বরং এটি সরকারের রাজস্ব আয় বাধাগ্রস্ত করে। আমরা খুব দ্রুত অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করব। উপজেলা প্রশাসনকে ইতোমধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা