১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১, ১১ রজব ১৪৪৬
`

কুষ্টিয়ায় পদ্মার চরে শিকারিদের কবলে অতিথি পাখি

শিকারিদের জালে আটকে যাওয়া পাখি : নয়া দিগন্ত -

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের পদ্মার চরে অবাধে শিকার করা হচ্ছে অতিথি পাখি। জাল দিয়ে ফাঁদ পেতে ও দেশীয় নানা ধরনের যন্ত্র দিয়ে ফাঁদ তৈরি করে শিকার করছে দেশী-বিদেশী এই অতিথি বা পরিযায়ী পাখি।
প্রতি বছরের মতো শীতের শুরুতে ঝাঁকে ঝাঁকে এবারো আসতে শুরু করে এসব পরিযায়ী পাখি। সুযোগ বুঝে শিকারিরা এসব পাখি ধরে বিক্রি করছেন বিভিন্ন বাজারে এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। এ দিকে শীত মৌসুমে শিকারিদের তৎপরতা বাড়ে পদ্মার চরে। তাই প্রশাসনকে তৎপর হওয়ার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ সংগঠকরা।

বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন বলছেন অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছেন তারা। সে ক্ষেত্রে পাখি শিকার নিষিদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ লক্ষ করা যায়নি। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মরিচা, ফিলিপনগর, রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের পদ্মার চরে এবার বিপুল পরিমাণে অতিথি বা পরিযায়ী পাখির সমাগম ঘটেছে। এসব পাখি শিকারে শিকারিরা বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চরে অবস্থান নেয়। পরে ভোরে বিভিন্ন বাজারে বিক্রির জন্য পাখিগুলো নিয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন বিকেল হলেই বড় জাল পাতা হয় চরে। এসব জালে পাখি আটকা পড়লে তা ধরে বিক্রি করে দেয় শিকারিরা। আবার অনেক সময় তারা নিজেরাই রান্না করে খায়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া বার্ড ক্লাবের সভাপতি এসআই সোহেল বলেন, পাখি শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ। পাখি শিকার প্রতিরোধে বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এগুলো আমাদের পরিবেশের সম্পদ। এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে নিজ নিজ এলাকাগুলোতে। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে পদ্মার চরাঞ্চলের পানি কমতে শুরু করেছে। এ সময় পুঁটি, খলসে ও দারকিনাসহ বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট মাছ ও পোকা-মাকড় দেখা যায়। এ সময় অতিথি পাখিরা খাবারের জন্য অপেক্ষাকৃত শীত থেকে বাঁচতে নদীর চরে আসে।

পদ্মা তীরবর্তী এলাকাবাসী জানিয়েছে, এবার বুনো হাঁস, ছোট সারস পাখি, বড় সারস পাখি, শামুকখোল, বালিহাঁস, হরিয়াল, কাদাখোঁচা, রাজসরালি, পাতিকুট, রামঘুঘু, নিশাচর, ডুবুরি পাখিসহ নানা প্রজাতির পরিযায়ী বা অতিথি পাখি আশ্রয় নিয়েছে পদ্মার চরে।

পাখি শিকারের বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা বন কর্মকর্তা আবুবকর সিদ্দিক বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি, দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। পাখি শিকারের বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, পাখি শিকারের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। তবে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সচেতনতা বৃদ্ধিতে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এসব অতিথি পাখিসহ সবধরনের পাখি শিকার বন্ধে এক্ষুণি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন সচেতন মহল।


আরো সংবাদ



premium cement