সিরাজগঞ্জে বিসিক শিল্পপার্কের প্লট বরাদ্দে দীর্ঘসূত্রতা
- নুরুল ইসলাম রইসী, সিরাজগঞ্জ
- ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০, আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:২৪
যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু ও রেলসেতুসংলগ্ন যমুনার তীরে সোয়া সাতশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত সিরাজগঞ্জ বিসিক শিল্পপার্ক নির্মাণকাজ শেষ হলেও এখনো প্লট বরাদ্দের বিজ্ঞপ্তি দেয়নি কর্তৃপক্ষ। ফলে স্থবির হয়ে আছে শিল্পায়ন। শিল্প উদ্যোক্তারা প্লট বরাদ্দ পেতে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছেন, কিন্তু কোনো সুফল মিলছে না। এ নিয়ে উদ্যোক্তাদের মধ্যে একদিকে অসন্তোষ বিরাজ করছে, অন্যদিকে রাজস্ব আয়ে পিছিয়ে পড়ছে সরকার।
জানা যায়, সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতুর গুরত্ব এবং যমুনা নদীপথকে ব্যবহার করে সিরাজগঞ্জে তাঁতশিল্প বিকাশের সম্ভাব্যতাসহ ‘শিল্প পার্ক’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বঙ্গবন্ধু সেতু ও নতুন নির্মিত রেলসেতুর পশ্চিমপাড়ে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছাতিয়ানতলী, পূর্ব মোহনপুর, বনবাড়িয়া, বেলুটিয়া ও মোড়গ্রাম মৌজার মোট চারশ’ একর জমির ওপর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। ৭১৯ কোটি ২১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য শিল্পায়নের মাধ্যমে লাখো মানুষের কর্মসংস্থান ও দেশীয় তাঁতশিল্পের বিকাশ সাধন করা।
২০১০ সালে বিসিক শিল্পপার্ক স্থাপনে উদ্যোগ নেয় সরকার। এরপর নদী অনুশাসন, ডিপিপি অনুমোদন এবং ২০১৫ সাল নাগাদ জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এদিকে প্রকল্প এলাকা যমুনা নদীর তীরে হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে নদীর তীর রক্ষাবাঁধ নির্মাণ শেষে ২০১৮ সালে মাটি ভরাটসহ বিভিন্ন প্যাকেজে শিল্পপার্ক স্থাপনের কাজ শুরু হয়। বর্তমানে বিসিক শিল্পপার্কে শিল্প স্থাপনে পুরোপুরি প্রস্তুত। ভূমি উন্নয়ন, সয়েল টেস্ট, ডাইক বাঁধ, ডাম্পিং ইয়ার্ড, মেইন গেট নির্মাণ, রিভার প্রটেকশন, অফিস ভবন, পাম্প হাউজ, পানি সরবরাহ লাইন, গভীর নলকূপ, অভ্যন্তরিণ সড়ক, ড্রেন,পরিবেশ বান্ধব লেক, বৃক্ষ রোপন ও বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ লাইন স্থাপনও শেষ।
প্রকল্প অফিস আরো জানায়, চারশ’ একর জমির ওপর স্থাপিত প্রকল্পের ২৭৫ একর জমিতে এ বি ও এস (স্পেশাল)- এই তিন ক্যাটাগরির ৮২৯টি প্লট প্রস্তুত করা হয়েছে। শিল্পপার্কের পরিবেশবান্ধব করা ও সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে ১০ একর জায়গাজুড়ে সবুজ বৃত্তসহ একটি হ্রদ নির্মাণও চলমান রয়েছে। এ ছাড়া পার্ক এলাকায় প্রশাসনিক জোন, পুলিশ ফাঁড়ি, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, আবাসিক কোয়ার্টার, রেস্টুরেন্ট ও মার্কেটের কাজ এগিয়ে চলছে। এ ক্যাটাগরির প্লট ২০ হাজার, বি ক্যাটাগারির প্লট ১০ হাজার ও এস ক্যাটাগরির প্লট ছয় থেকে ২৬ হাজার বর্গফুট আয়তনের। এ শিল্পপার্কে ৮২৯টি প্লটে ৫৭০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যাবে। দেশীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সাথে রফতানি ও আমদানিমুখী শিল্পপ্লটও অনুমোদনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে।
সিরাজগঞ্জের বিসিক শিল্পপার্কের উপ-মহাব্যবস্থাপক ও প্রকল্প পরিচালক জাফর বায়েজিদ বলেন, প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে। ডিপিপি অনুযায়ী প্রতি বর্গফুটের মূল্য ধরা হয়েছিল ৭৬৮ টাকা। তবে মূল্য কমিয়ে পুনরায় দর ঘোষণা করবে কর্তৃপক্ষ। প্লট বরাদ্দ বিজ্ঞপ্তি হলেই শিল্প স্থাপন শুরু হতে পারে।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা সরোয়ার হোসেন সবুজ বলেন, বিসিক শিল্পপার্কে ওয়ার মিল, ওয়েল রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট ও আধুনিক অটো মোবাইল সার্ভিস কারাখানা স্থাপনের ইচ্ছে আছে। এ ছাড়া এখানে একটি ওষুধ কোম্পানি ও বৃহৎ পরিসরে একটি টয় ফ্যাক্টরি স্থাপনেও আগ্রহী আছে অনেকেই। এম এম মতিন কটন মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম মো: মুসা বলেন, বিসিকের সাথে যোগাযোগ করেছি। প্লট বরাদ্দ পেলেই এখানে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে।
সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, সিরাজগঞ্জে নতুন স্থাপিত এই শিল্পপার্কের সাথে রেলপথ, সড়কপথ ও নৌপথের যোগাযোগ রয়েছে। যোগাযোগের এত সুন্দর ব্যবস্থার কারণেই এখানে ব্যবসা ভালো হবে। কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্লট বরাদ্দের দাবি জানাচ্ছি। বিসিক চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দীন আহাম্মদ খান বলেন, উপর মহলের নির্দেশ পেলেই প্লট বরাদ্দের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা