চৌগাছায় বিলুপ্তির পথে বাঁশ-বেত শিল্প
- এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর)
- ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
যশোরের চৌগাছায় বাঁশ-বেত শিল্প বিলুপ্তির পথে। রকমারি প্লাস্টিকের পণ্যের দখলে বাজার। কর্মহীন হয়ে পড়ায় পেশা ছাড়ছেন অনেকে। এক সময় এ উপজেলার বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরি পালি, চাঙ্গারি, ধামা, কুলা, ডালা, ঝুড়িসহ বিভিন্ন শৌখিন দ্রব্যসামগ্রীর বেশ কদর ছিল দেশজুড়ে। কিন্তু বর্তমানে এ শিল্পটি ধ্বংস হতে চলেছে। প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচর্যা, রোপণ ও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে এ উপজেলার বাঁশ উজাড় হয়ে যাচ্ছে। ফলে বাঁশ-বেতনির্ভর এ শিল্পটি এখন বিলুপ্ত হতে চলেছে।
এক সময় গ্রামের হাটবাজারে বাঁশের তৈরি নানা ধরনের কুলা, ডালা, চাঙ্গারি, ধামা, টুকরি, চালুনি, খালই, ঠুশি, খুচিসহ মাছ ধরার বিভিন্ন সামগ্রী, মই, খেলনা ও বিভিন্ন শৌখিন শিল্পসামগ্রী বিক্রি হতো। এলাকায় কাঁচা ঘর, ঘরের চাল, বাঁশের খুঁটি, বেড়া, ঘরের দরজা ইত্যাদিতেও বাঁশ ও বেত শিল্পের ব্যবহার ছিল চোখে পড়ার মতো। বর্তমানে এ শিল্পের সাথে জড়িত পরিবারগুলোর সদস্যরা এখন অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছে। বলা যায় আয়-রোজগারের অভাবে অনেক পরিবার মানবেতর জীবনযাপনও করছে।
গত রোববার উপজেলার সলুয়া বাজারে বাঁশের তৈরি কুলা, ডালা, মাথালি বিক্রি করতে আসা বিশ্বনাথপুর গ্রামের অনিল কমলে বলেন, বাপ-দাদার আমলের এ পেশাকে এখনো আঁকড়ে ধরে রেখেছি। এক টুকরা খাস জমির ওপর বসতবাড়ি বানিয়ে বাবা-মা, স্ত্রীসহ ৯ সদস্যের পরিবার নিয়ে থাকি। রাত-দিন খেটে বাঁশ দিয়ে যা তৈরি করি হাটবাজারে এনে তা সহজে বিক্রি করতে পারি না। বিক্রি হলেও খুব কম দাম পাওয়া যায়। সরকারের সুনজরে এলে হয়তো শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখা যেত। অনেক দুঃখ-কষ্টে দিন কাটছে আমাদের। উপযুক্ত কাজ ও অভিজ্ঞতার অভাবে আমরা অন্য পেশা বা ব্যবসা-বাণিজ্য করার মতো পুঁজিও নেই আমাদের।
উপজেলার স্বরুপদহ ইউনিয়নের টেঙ্গুরপুর গ্রামের সুনিল হাজেরা বলেন, পেশা ছেড়ে দিয়ে এখন গরুর হাটে কাজ করি। এখান থেকে যা পাই তাই দিয়ে চলে আমার সংসার।
উপজেলার খড়িঞ্চা গ্রামের খোকন ঋষি বলেন, এক সময় আমাদের এলাকায় আনাচে-কানাচে প্রচুর বাঁশঝাড় ছিল। কালের আবর্তে উজাড় হয়েছে বাঁশঝাড়। সংসার চালাতে মানুষের ঝাড় থেকে কুঞ্চি ও বাঁশ নিয়ে ঝুড়ি, ডালা, খালই, মাথালি ইত্যাদি তৈরি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতাম। সব মিলিয়ে বলা চলে রকমারি প্লাস্টিকের পণ্যের দখলে বাজার। তাই কর্মহীন হয়ে পড়ায় পেশা ছাড়ছেন অনেকে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা