০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ৭ রজব ১৪৪৬
`
তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

একদিনও চলেনি ৩০ লাখ টাকার নৌ-অ্যাম্বুলেন্স

নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি শশীগঞ্জ সুইজঘাটের বেড়িবাঁধের ভেতরে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে : নয়া দিগন্ত -


দেশের একমাত্র দ্বীপজেলা ভোলার দুর্গম জনপদের মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে সরকারের দেয়া প্রায় ৩০ লাখ টাকার নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি একদিনের জন্যও কাজে আসেনি। এটি বছরের পর বছর খালে পড়ে থাকা ছাড়া আর কোনো কাজ হয়নি। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ভেতরে ময়লা-আবর্জনা জমে এখন রোগী পরিবহনের অনুপযোগী হয়ে গেছে। একদিনও নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি না চললেও ৫০ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে ডিজেল খরচ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, উপকূলীয় দুর্গত এলাকার মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি বেজড হেলথ কেয়ার প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৯-২০ অর্থবছরে তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ দেয় সরকার। বরাদ্দ অনুযায়ী ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি তজুমদ্দিন হাসপাতালে এটি হস্তান্তর করা হয়। এটির বরাদ্দ মূল্য ছিল ৩০ লাখ টাকা।

সরেজমিন দেখা যায়, অ্যাম্বুলেন্সটি শশীগঞ্জ সুইজঘাটের দক্ষিণ পাশে বেড়িবাঁধের ভেতরে একটি বাঁধা (নদীর সাথে সংযোগ নেই) খালে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। সামনের ও পাশের গ্লাস এবং মেশিনপত্র ভাঙা। ভেতরে রোগী শোয়ার ও স্বজনদের বসার সিট নেই। যে কারণে রাষ্ট্রের ৩০ লাখ টাকা গচ্চা ছাড়া আর কোনো কাজে আসেনি এই নৌ-অ্যাম্বলেন্সটি। একদিনের জন্যও চলেনি এবং বহন করতে পারেনি একজন রোগীও। এ সবের মধ্যে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে চর জহিরউদ্দিন ও চর মোজাম্মেলে চলাচল বাবদ ৫০ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে তেল খরচ দেখিয়ে। যদি তেল খরচের কোনো বিল-ভাউচার দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। উপজেলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল চর মোজাম্মেল, চর জহিরউদ্দিন, চর নাসরিন, সিডার চর, চর উরিলে বসবাসরত মানুয়ের জরুরি চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সরকার এটি বরাদ্দ দিয়েছিল।

ভোলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানসহ নানা কারণে তজুমদ্দিন উপজেলার অ্যাম্বুলেন্সটি ২০২০ সালের ২২ মে বিকল দেখানো হয়। কিন্তু ২০২৩ সালের ২৩ জানুয়ারি আউটসোর্সিং থেকে মহিউদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে ড্রাইভার হিসেবে পাঁচ দিনের ট্রেনিং করান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারপর কমিউনিটি বেইসড হেলথ কেয়ার প্রকল্পের মাধ্যমে তাকে বেতন-ভাতা প্রদান করা হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, চরাঞ্চলের মানুষ যে কোনো সমস্যায় শশীগঞ্জ সুইজঘাটের ট্রলারে পারাপার হয়ে থাকে। রাতে কারো চিকিৎসা বা অন্য জরুরি প্রয়োজনে ঘাটের মাঝিদের ফোন দিলে তারাই পার করে দেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: উত্তম কুমার সরকার বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। তারপরও যতদূর জানতে পেরেছি কমিউনিটি বেইসড হেলথ কেয়ার প্রকল্পটি বন্ধ হওয়ার কারণে এটি চালু করা সম্ভব হয়নি। একেবারেই মেরামতের অযোগ্য বর্তমানে। তবুও যোগাযোগ করে দেখতে হবে অ্যাম্বুলেন্সটি ফের চালু করা যায় কিনা।

 


আরো সংবাদ



premium cement