মুন্সীগঞ্জে নতুন বই নিতে শিক্ষার্থী প্রতি গুনতে হলো ১০০ টাকা
তদন্ত কমিটি গঠন : ৫৭০ জনের কাছ থেকে সর্বমোট আদায় করা হয়েছে ৫৭ হাজার টাকা। গত দুই দিনেই আদায় হয়েছে ২৫,৩০০ টাকা। বাদ পড়েনি ইয়াতিম শিক্ষার্থীরাও- আব্দুস সালাম মুন্সীগঞ্জ
- ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
মুন্সীগঞ্জে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণীর নতুন বইয়ের জন্য প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের বিনোদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। এ ছাড়া ছাড়পত্র দিতেও নেয়া হয়েছে ২০০ টাকা। অনৈতিকভাবে ৫৭০ জনের কাছ থেকে সর্বমোট আদায় করা হয়েছে ৫৭০০০ টাকা। গত দুই দিনে আদায় হয়েছে ২৫,৩০০ টাকা। বাদ পড়েনি ইয়াতীম শিক্ষার্থীরাও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে ১৩৫ জন, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ১৩০, তৃতীয় শ্রেণীতে ১১৫, চতুর্থ শ্রেণীতে ১১৫ এবং পঞ্চম শ্রেণীতে ৭৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এদের মধ্যে গত দুদিনে প্রথম শ্রেণীতে ৭০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণীর ৮২ জন, তৃতীয় শ্রেণীর ১০১ জন শিক্ষার্থী নতুন বই নিয়েছেন। তবে শিশু ও পঞ্চম শ্রেণীর কোনো শিক্ষার্থী বই পায়নি। দু-এক দিনের মধ্যে পাবে নতুন বই তারা। নতুন বই নেয়া চতুর্থ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী বলেন, বই দেয়ার কথা বলে আমাদের বুধবার বিদ্যালয়ে ডেকে স্যার ও ম্যাডামরা আমাদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নেয়।
আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে চলছেন প্রধান শিক্ষক সামসুল ইসলাম। বিদ্যালয়ে ৭জন শিক্ষক রয়েছেন। এ ছাড়াও চারজন অতিরিক্ত শিক্ষক রাখা হয়েছে যাদের বেতন দেয়া হয় না। প্রাইভেটের আশায় তারা ক্লাস নেন। শাহনাজ আক্তার শানু, মায়া, লুৎফা ও সাগরিকা। সরকারি শিক্ষকরা বসে বসে ফেসবুক চালান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিভাবক বলেন, গ্রামের স্কুল, স্যাররা যা কয় তাই আমরা বিশ্বাস করি। আমরা জানতাম সরকারি কোনো খরচ নাই। তয় কি কারণে ১০০ টেকা হেরা নিবো জিগাইছিলাম। স্যাররা কইলো বই দিবো খরচ আছে। পঞ্চম শ্রেণী থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী আব্দুল খালেক বলেন, আমি বিনোদনপুর রামগোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। তাই টিসি নিতে এলে ২০০ টাকা নিয়েছেন শিক্ষকরা।
প্রধান শিক্ষক শামসুল ইসলাম সিকদার টাকা নেয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, বই এবং ছাড়পত্র দিয়ে কারো কাছ থেকে কোনো ধরনের টাকা নেয়া হয়নি। যারা বলেছে, তারা ভুল বলেছে। অভিভাবক ও সাবেক কমিটির সদস্য জয়নাল আবেদীন ও সভাপতি মঞ্জিল দেওয়ান ১০০ টাকা করে নেয়ার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আয়া বুয়ার বেতনের জন্য ১০০ টাকা করে উঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল মোমেন মিয়া বলেন, নতুন বই এবং সনদ দেয়া বাবদ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এক টাকাও নেয়ার সুযোগ নেই। যদি শিক্ষকরা এমন কাজ করে থাকেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি জেনেছি। ৩ সদস্য বিশিষ্ট্য একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এডিসি শিক্ষা ও আইসিটি, উপজেলা শিক্ষা অফিসার, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা