দুই মাস সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের নদ-নদীতে কাঁকড়া ধরায় নিষেধাজ্ঞা
- জিললুর রহমান সাতক্ষীরা
- ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০৫
প্রজনন মৌসুমকে ঘিরে আগামী দুই মাস পশ্চিম বন বিভাগের আওতাধীন সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে নদ-নদীতে কাঁকড়া ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। গত ১ জানুয়ারি বুধবার থেকে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুন্দরবনের পশ্চিম ও পূর্ব এই দুই বিভাগে এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে বলে জানায় বনবিভাগ।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের ছয় হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে জলভাগের পরিমাণ এক হাজার ৮৭৪ বর্গকিলোমিটার। যা পুরো সুন্দরবনের আয়তনের প্রায় ৩১ ভাগ। সুন্দরবনের জলভাগে ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি ও ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া রয়েছে। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি এই দুই মাস কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম। তাই ৫৯ দিনের জন্য জেলেদের সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরার অনুমতি বন্ধ রাখে বন বিভাগ।
বুড়িগোয়ালিনী এলাকার কাঁকড়া ধরা জেলে আবুল হোসেন বলেন, আর্থিকভাবে সচ্ছল কোনো লোক সুন্দরবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঁকড়া ধরতে যায় না। যারা যায়, তারা সবাই গরিব। দুই মাস নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের পরিবারে খাদ্যাভাব দেখা দিতে পারে। মহাজনদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে চলতে হয়। এ সময় সরকারি সহায়তা খুবই দরকার বলে তিনি জানান।
সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ অফিস সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতায় বুড়িগোয়ালিনী, কদমতলা, কৈখালী ও কোবাদক ফরেস্ট স্টেশনের আওতায় দুই হাজার ৯০০টি নৌকা সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতিপত্র আছে। এর মধ্যে কাঁকড়া ধরার অনুমতিপত্র আছে এক হাজার ৬০০টি নোৗকার। নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকাকালীন কোনো জেলে কাঁকড়া ধরার জন্য বনে প্রবেশ করতে পারবে না।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) জিয়াউর রহমান জানান, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে কাঁকড়া ডিম পাড়ে। সাতক্ষীরা রেঞ্জে বিভিন্ন নদ-নদীতে শীলা প্রজাতির কাঁকড়া বেশি পাওয়া যায়। প্রজনন মৌসুমে সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে কাঁকড়া নদ-নদীতে উঠে আসে এবং ডিম পাড়ে। ডিম পাড়ার সময় ক্ষুধার্ত থাকে বলে এদের ধরা যায় খুব সহজেই। যদি এ সময় কাঁকড়া শিকার না করা হয়, তাহলে পরের বছর বেশি কাঁকড়া উৎপাদন সম্ভব। কাঁকড়ার প্রজনন বৃদ্ধি করার জন্যই সরকারের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ সময় বনরক্ষীদের টহলও জোরদার করা হবে।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) মশিউর রহমান বলেন, কাঁকড়া বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম হাতিয়ার। কাঁকড়া প্রজনন বৃদ্ধি করার জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। জেলেদের কাঁকড়া আহরণ না করার জন্য কঠোরভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা