পঞ্চগড়ে আমনের ভালো ফলনে খুশি কৃষকরা
- পঞ্চগড় প্রতিনিধি
- ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
পঞ্চগড় জেলায় প্রকৃতিনির্ভর আমন ধানের এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। মৌসুম শেষে পর্যাপ্ত বৃষ্টি আর পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় আগের তুলনায় অনেক বেশি ফসল ঘরে তুলতে পারছে কৃষকরা। ধান কাটা ও জমিতেই শুকানোর পর সেই ধান বাড়িতে এনেছেন কৃষকরা। তারা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন সেই ধান মাড়াইয়ের কাজে।
এখন কৃষকরা আগের মতো আর হাতে ধান মাড়াই করেন না। ধান মাড়াই মেশিনের ওপরই সবাইকে নির্ভর করতে হচ্ছে। যার ফলে খড় নষ্ট হয় অনেক কম। তবে সঙ্কট দেখা দিয়েছে ধান মাড়াই মেশিন নিয়ে। একসাথে ধান মাড়াই কাজ শুরু হওয়ায় মেশিন মালিকরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। নতুন ধানের ম ম গন্ধে মেতেছে গ্রাম। ঘরে ঘরে চলছে পিঠা-পুলির আয়োজন। অনেকে আবার নতুন ধানের ভাত খাওয়ার আগে পায়েশ রান্না করে মসজিদে দিচ্ছেন।
কৃষকরা জানান, বহুকাল ধরেই পঞ্চগড়সহ উত্তরের জেলাগুলোতে কৃষকরা সম্পূর্ণ প্রকৃতিনির্ভর বৃষ্টির পানি দিয়ে আমন ধান চাষ করে আসছেন। আগে অগ্রহায়ণ মাসের শুরু থেকে আমন ধান কাটা শুরু হলেও এখন কিছু ধান কৃষকরা ঘরে তুলতে পারছেন আগেভাগেই।
এবার বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে উত্তরের জেলাগুলোতে। আগের বছরের চেয়ে এবার বেশি ধান উৎপন্ন হয়েছে। অনেকে আবার ধান কাটার পর দ্রুত জমিতে চাষ দিয়ে মাটি শুকিয়ে জমিতে আলু, সরিষা, বাদাম, ভুট্টা, মরিচসহ শীতকালীন বিভিন্ন শাকসবজি চাষ করছেন।
পঞ্চগড় জেলা সদরের সদর ইউনিয়নের বলেয়াপাড়া গ্রামের কৃষক হাশেম আলী জানান, এবার তিনি ১৬ বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করেছেন। জমি থেকে ইতোমধ্যে সব ধান বাড়িতে এনেছেন। কয়েক বিঘা জমির ধান মাড়াই করার পর এখন আর মেশিন পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতি বিঘাতে ফলন এসেছে ২০ মণের উপরে। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রয় হচ্ছে এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৩৫০ টাকা দরে। ধানের দাম আরো বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। গোফাপাড়া গ্রামের ধান মাড়াই মেশিন মালিক বাবুল হোসেন বঙ্গা জানান, তিনি এক বিঘা জমির ধান মাড়াই করতে নিচ্ছেন ৭০০ টাকা করে। একটি মেশিন দিয়ে প্রতিদিন ১৬-১৮ বিঘা জমির ধান মাড়াই করা যায়। দুইজন শ্রমিক কাজ করছে। তাদের প্রতিদিন ৭০০ টাকা করে হাজিরা দিতে হয়। সব মিলিয়ে খুব ব্যস্ততার মধ্যে দিন কাটছে। ধান মাড়াই শেষ হলে অপেক্ষা করতে হবে ভুট্টা ও বোরো ধান মাড়াইয়ের জন্য।
পঞ্চগড়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক আব্দুল মতিন বলেন, চলতি আমন মৌসুমে পঞ্চগড় জেলায় এক লাখ ৩০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল তিন লাখ ৪৬ হাজার ৩৪৩ মেট্রিক টন ধান। তবে আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি ধান উৎপন্ন হয়েছে। এবার বাজারে ধানের দাম অনেক ভালো। কৃষকরা আগের বছরের তুলনায় বেশি লাভবান হচ্ছেন। আর আমন ধান কাটার পর সেই জমিতে কৃষকরা আলু, গম, মরিচ, বাদাম ও সরিষাসহ বিভিন্ন শাকসবজি আবাদ করা করা শুরু করেছেন। অনেকে আবার বোরো ধান লাগানোর প্রস্তুতি শুরু করেছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা