সঙ্কর জাতের ছাগলে মিলবে দ্বিগুণ গোশত
- মো: লিখন ইসলাম বাকৃবি
- ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বাংলাদেশে গোশত বা রেড মিটের চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পেলেও সেই তুলনায় সরবরাহ অপ্রতুল। এর মধ্যে ছাগলের গোশত, যা ধর্ম- বর্ণ নির্বিশেষে উৎসব-পার্বণ থেকে শুরু করে দৈনন্দিন খাবারে সবাই খেয়ে থাকেন। কিন্তু বাংলাদেশে ছাগলের গোশতের দাম সবচেয়ে বেশি। এর মূল কারণ চাহিদার তুলনায় সরবরাহের ঘাটতি। শুধুমাত্র দেশীয় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল দিয়ে এ চাহিদা পূরণ সম্ভব না হওয়ায় দীর্ঘ দিন ধরে বিকল্প পথ খুঁজছিলেন বিজ্ঞানীরা। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক দক্ষিণ আফ্রিকার বোয়ার জাতের পাঠার সাথে ব্ল্যাক বেঙ্গল পাঠি/ছাগীর সঙ্করায়নের মাধ্যমে একটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন, যা ব্ল্যাক বেঙ্গলের তুলনায় দ্বিগুণ গোশত উৎপাদনে সক্ষম।
এ উদ্ভাবনের পেছনে গবেষণা দলের প্রধান ছিলেন পশুপালন অনুষদের পশু প্রজনন ও কৌলিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: রুহুল আমিন এবং সহযোগী গবেষক ছিলেন একই বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী খালিদ সাইফুল্লাহ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পরিচালিত ‘ডেভেলপমেন্ট অব মিট টাইপ ক্রসব্রিড ইউজিং বোয়ার অ্যান্ড ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের আওতায় তারা এ গবেষণা সম্পন্ন করেন। গবেষণাটি সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক জার্নাল ‘জার্নাল অব অ্যানিমেল রিসার্চ’ -এ প্রকাশিত হয়েছে।
অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন বলেন, বোয়ার জাতের ছাগলের উৎপত্তি দক্ষিণ আফ্রিকায়। যা গোশতের জন্যে বিশ্বখ্যাত। বছরে সর্বোচ্চ ৭০ কেজি গোশত দিতে পারে। তবে এটি বাংলাদেশের জলবায়ুর সাথে পুরোপুরি মানানসই নয়। তাই এ সমস্যার সমাধানে ব্ল্যাক বেঙ্গল ও বোয়ারের সঙ্কর জাত উদ্ভাবন করা হয়। পুরুষ ছাগল বছরে ২৬ কেজি এবং মাদি ছাগল ২৩ কেজি পর্যন্ত গোশত উৎপাদনে সক্ষম। এ জাতটি রোগ প্রতিরোধে শক্তিশালী এবং সহজে পালন করা যায়।
তিনি আরো জানান, গবেষণায় দেখা গেছে, সঙ্করের স্ত্রী বাচ্চাদের এক বছর বয়সে মাত্র ছয় শতাংশের ডাক এসেছিল। অন্যদিকে ব্ল্যাক বেঙ্গল পাঠীর ছয়-সাত মাসেই প্রথম গর্ভধারণ করে। অর্থাৎ ব্ল্যাক বেঙ্গলের তুলনায় সঙ্কর স্ত্রী বাচ্চাদের মা হতে প্রায় দ্বিগুণ সময় লাগে। এমন অবস্থায় এক বছর বয়সে লিঙ্গ নির্বিশেষে সব সঙ্কর যদি জবাই করে গোশত উৎপাদন করা হয়, তাহলে কৃষকের দ্বিগুণ লাভ হবে ব্ল্যাক বেঙ্গলের তুলনায়।
গবেষক আরো বলেন, বাংলাদেশে জাতীয় প্রজনন নীতিমালায় শুধুমাত্র ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল অনুমোদিত। ফলে সঙ্কর জাতের ছাগল দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে সরকারি অনুমোদন একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গবেষক খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো কম খরচে ভোক্তার কাছে গুণগত গোশত পৌঁছে দেয়া। খামারিরা এ জাত পালন করে বছরে প্রায় দ্বিগুণ মুনাফা করতে পারবেন। কারণ, একই পরিমাণ খাবার ও পরিচর্যায় ব্ল্যাক বেঙ্গলের তুলনায় সঙ্কর জাত থেকে দ্বিগুণ গোশত পাওয়া যায়।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা