জমে উঠেছে শ্রীমঙ্গলের পর্যটন স্পটগুলো
- এম এ রকিব শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)
- ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বেড়েছে পর্যটকদের সমাগম। চায়ের রাজধানী খ্যাত শ্রীমঙ্গলসহ পাশর্^বর্তী উপজেলা কমলগঞ্জের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলো এখন পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে গত সপ্তাহ থেকে শ্রীমঙ্গলের বেশির ভাগ হোটেল, রিসোর্টগুলো হাউজফুল অবস্থা। রমরমা ব্যবসা করছেন রেস্টুরেন্ট, মুনিপুরী কাপড়ের দোকানসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
অনেক হোটেল, রিসোর্টের মালিক জানিয়েছেন, ডিসেম্বর মাসে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় বন্ধ থাকার পাশাপাশি বড়দিনের বন্ধসহ থার্টিফার্স্টকে সামনে রেখে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত তাদের বেশির ভাগ রুম অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। দীর্ঘ মন্দাভাবের পর প্রত্যাশানুযায়ী সারা দেশের ন্যায় শ্রীমঙ্গলে পর্যটকের আগমনে বেজায় খুশি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
বেশ কিছু দিন ধরে এ অঞ্চলের বিস্তীর্ণ সবুজ চা বাগানসহ নানান রঙে রঙিন শ্রীমঙ্গলের প্রকৃতিতে তীব্র শীত জেঁকে বসেছে। ৯ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই থাকছে এখানকার তাপমাত্রা। রোববার সকাল ৯টায় শ্রীমঙ্গলের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পর্যটকরা ছুটাছুটি করছেন বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলোতে। পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে বেড়াতে আসা পর্যটকরা প্রকৃতির সাথে মিলেমিশে আনন্দ উল্লাসের পাশাপাশি একে অন্যের ছবি তুলছেন ভ্রমণের স্মৃতিগুলো ধরে রাখতে।
রোববার শহরের ভানুগাছ সড়কের পাশের চা বাগান, মুনিপুরী বস্তি, পিছেরমুখ, রাধানগর ও লাউয়াছড়া ঘুরে দেখা যায় চান্দের গাড়িগুলোতে (ছাদ খোলা জিপগাড়ি) পর্যটকরা হইহুল্লোড় করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাচ্ছেন। পাশাপাশি চা বাগানের সড়কের পাশে প্রচুর সংখ্যক প্রাইভেট গাড়ি ও বাস রিজার্ভ করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকরা চা বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। এ ছাড়া খাবারের হোটেলসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট সব দোকানগুলোতে কেনাকাটার জন্য ভিড় করছেন তারা।
বন্ধুদের সাথে ঢাকার নবাবপুর থেকে বেড়াতে আসা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বলেন, অনেক দিন পর শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে। শ্রীমঙ্গলের প্রকৃতি ও পরিবেশ অনেক সুন্দর। সময় করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আবার আসব।
ট্যুর গাইড পংকজ বলেন, বেশ কিছু দিন পর পর্যটকের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। রুম বুকিংয়ের জন্য প্রতিদিন প্রচুর কল আসছে। কিন্তু গেস্টদের চাহিদা মতো রুম বুক করতে পারছি না। অনেক হোটেল, রিসোর্ট অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে।
বালিশিরা রিসোর্টের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের বালিশিরা রিসোর্ট ও নভেম ইকো রিসোর্টে কোনো রুম খালি নেই। সব বুকিং হয়ে গেছে। আমরা প্রতিদিন রুমের জন্য কল পাচ্ছি, কিন্তু রুম দিতে পারছি না। তবে জানুয়ারি মাসের জন্য কিছু কিছু রুম আগাম বুকিং নিচ্ছি।
লেমন গার্ডেন রিসোর্টের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (ইডি) মোহাম্মদ শাহিন আহমেদ বলেন, দীর্ঘ মন্দাভাবের পর প্রত্যাশানুযায়ী পর্যটকরা আসছেন। আমাদের স্টাফরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছে অতিথিদের সেবায়। তিনি আরো বলেন, পর্যটকদের বরণ করতে সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে লেমন গার্ডেন রিসোর্ট। প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে নান্দনিকভাবে সাজানো হয়েছে আমাদের প্রতিষ্ঠানটি। রিসোর্টটিতে প্রবেশ করলে একজন পর্যটকের যা যা প্রয়োজন সবই রয়েছে আমাদের এখানে। মিনি চিড়িয়াখানা, সিনেপ্লেক্স, ইনডোর-আউটডোর গেইম, কনফারেন্স হল, কিডস জোন, সুইমিংপুল, দৃষ্টিনন্দন গার্ডেনসহ বিনোদনের সব ব্যবস্থা রয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোনের অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ কামরুল হাসান চৌধুরী বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও থানা পুলিশসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সমন্বয়ে আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছি। পর্যটন মৌসুমের শুরু থেকেই শ্রীমঙ্গলে প্রচুর সংখ্যক পর্যটক আসছেন। ছুটির দিনগুলোতে বাড়তি চাপ থাকে। আমরা অতিথিদের নিরাপত্তায় টহল জোরদার করেছি। এ ছাড়া বিভিন্ন হোটেল রিসোর্টে খুঁজখবর রাখছি- পর্যটকদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা