জামালপুরে অর্ধেক জনবল নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম
প্রশাসনিক জটিলতার পাশাপাশি শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘিœত হচ্ছে- খাদেমুল বাবুল জামালপুর
- ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪
জামালপুরের প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল অবস্থা চলছে। জেলার সাত উপজেলায় সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের ৪২টি পদের মধ্যে ২১ পদই শূন্য রয়েছে। জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা এক হাজার ১৬৪টি। সে হিসাবে ওই জেলার বিদ্যালয়গুলোর জন্য সমপরিমাণ প্রধান শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু কর্মরত আছেন মাত্র ৪৬৯ জন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জামালপুরের সাতটি উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে অন্তত ছয়জন করে ৪২ জন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের পদ রয়েছে। যার মধ্যে ২১টি অর্থাৎ অর্ধেক পদই শূন্য। যে কারণে স্কুল পরিদর্শন বা সঠিক তদারকি কঠিন হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি এক হাজার ১৬৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন করে প্রধান শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৪৬৯ জন। আর ২২৯ জন সহকারী শিক্ষককে দেয়া হয়েছে প্রধান শিক্ষক হিসেবে চলতি দায়িত্ব। ওই ২২৯ জন শিক্ষক জানে না কোন পদে চাকরি করেছেন তারা। এখন তারা না প্রধান শিক্ষক, না সহকারী শিক্ষক।
এদিকে ২২৯ জন সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক হিসেবে চলতি দায়িত্ব দেয়ায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠানে।
কারণে হিসেবে জানা গেছে, এক সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক হিসেবে চলতি দায়িত্ব দেয়ায় অন্যান্য শিক্ষকরা তাদের মন থেকে গ্রহণ করতে পারছেন না। এতে প্রশাসনিক জটিলতার পাশাপাশি শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘিœত হচ্ছে। এ ছাড়া ৪৩ জন কর্মচারীর মধ্যে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ১৮ জন। এতে অফিসিয়ার কার্যক্রমেও স্থবিরতার সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া জেলায় ২১৮ জন সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে বলে জানা গেছে ।
সবকিছু মিলে নদ-নদী বিধৌত ও বন্যাকবলিত জামালপুরে প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল অবস্থা চলছে। লোকবল সঙ্কট, শিক্ষকদের কর্ম ফাঁকি, কর্মকর্তাদের অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী উপস্থিতির হার ৫ থেকে ১০ শতাংশে নেমে এসেছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতির হার আশঙ্কাজনক কমে যাওয়ার তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, পতিত সরকার জেনারেল শিক্ষায় মুসলমানদের ওপর বিতর্কিত যে কারিকুলাম চাপিয়ে দিয়েছিল সেটি মেনে নেয়নি এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তাই তারা মাদরাসামুখি হয়ে উঠেছেন। তবে যত্রতত্র কওমি মাদরাসা ও কিন্ডারগার্টেন স্কুলকে দায়ী করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর মনিরুজ্জামান বলেন, পতিত সরকার জেনারেল শিক্ষায় মুসলমানদের ওপর বিতর্কিত হিন্দুত্ববাদী কারিকুলাম চাপিয়ে দিয়েছিল। যেটি মেনে নেয়নি এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। যে কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয় বিমুখ হয়ে পড়েছেন অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীরা। ঝুঁকে পড়েছেন মাদরাসা শিক্ষার দিকে। জামালপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোফাজ্জল হোসেন খান নয়া দিগন্তকে বলেন, কিভাবে দুর্গম এই জেলায় প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন করব। প্রয়োজনের তুলনায় জনবল সব ক্ষেত্রে অর্ধেকেরও কম। এক হাজার ১৬৪ জন প্রধান শিক্ষকের মধ্যে কর্মরত মাত্র ৬৯৫ জন। তাও আবার ২২৯ জন সহকারী শিক্ষক আছেন চলতি দায়িত্বে। ৪২ জন সহকারী শিক্ষা অফিসারের মধ্যে রয়েছেন মাত্র ২১ জন, ৪৩ জন অফিস স্টাফের মধ্যে আছেন ১৮ জন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা