চৌগাছায় ঘরে ঘরে কুমড়ো বড়ি তৈরির ব্যস্ততা
- এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর)
- ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৩
যশোরের চৌগাছায় ঘরে ঘরে চলছে কুমড়ো বড়ি তৈরির মহোৎসব। শীতকে স্বাগত জানিয়ে উপজেলার প্রত্যেক গ্রামের ঘরে ঘরে চলছে কলাই আর চালকুমড়ো দিয়ে বড়ি বানানোর কর্মযজ্ঞ। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে শুরু হয় তাদের বড়ি তৈরির কাজ।
জানা যায়, এ অঞ্চলের কুমড়ো বড়ি স্বাদে ও মানে ভালো হওয়ায় দিন দিন বেড়েই চলছে বড়ির চাহিদা। মাষকলাই ভিজিয়ে পাটায় পিষে সেই ডালের সাথে পাকা চালকুমড়ো কুরা মিশিয়ে তৈরি করা হয় এই সুস্বাদু বড়ি। শীতের সময় গ্রামের প্রায় ৮০ ভাগ মহিলা পালা করে বড়ি তৈরি করার কাজটি করে থাকেন। কুমড়ো বড়ি তরকারির একটি মুখরোচক খাদ্য। এই বড়ি তরকারির স্বাদে যোগ করে এক নতুন মাত্রা।
চৌগাছা পৌর শহরের বাকপাড়া গ্রামের ববিতা বলেন, কুমড়ো বড়ি তৈরিতে মূলত চালকুমড়া এবং মাষকলাইয়ের ডাল প্রয়োজন হয়। মাষকলাইয়ের ডাল ছাড়া অন্য ডালেও তৈরি করা যায় এই বড়ি। মচমচে করে রোদে শুকাতে পারলে এই বড়ির স্বাদ হয় অতুলনীয়। এ সময় গ্রামের প্রতিটা বাড়িতে কমবেশি কুমড়ো বড়ি তৈরি করা হয়। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাকিটা আত্মীয় স্বজনদের দেয়া ও বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করা যায়। শীতের সময় কুমড়ো বড়ির চাহিদা থাকে বেশি।
নারায়ণপুর ইউনিয়নের চাঁদপাড়া গ্রামের রুমা বেগম জানান, বড়ি তৈরির আগের দিন ডাল ভিজিয়ে রাখতে হয়। চালকুমড়ো ছিলে ভেতরের নরম অংশ ফেলে দিয়ে মিহিভাবে কুরে কুচি কুচি করে রাখতে হয়। এরপর কুমড়ো ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার পাতলা কাপড়ে বেঁধে সারা রাত ঝুলিয়ে রাখতে হয়, যাতে করে কুমড়ায় থাকা পানি নিংড়ে যায়। অন্যদিকে ডালের পানি ছেঁকে ঢেঁকি বা শিলপাটায় বেটে নিতে হয়। বর্তমানে অবশ্য অনেকেই বিদ্যুৎ চালিত মেশিনে ডাল কুটার কাজ করেন। এরপর কুটা-বাটা ডালের খামিরের সাথে কুমড়ো মেশাতে হয়। যতক্ষণ না ডাল-কুমড়োর মিশ্রণ হালকা হয়, ততক্ষণ খুব ভালো করে হাত দিয়ে এ মিশ্রণ মেশাতে হয়। এরপর কড়া রোদে চাটি বা কাপড় বিছিয়ে বড়ির মতো ছোট ছোট আকার দিয়ে একটু ফাঁকা ফাঁকা করে বড়িগুলো বসিয়ে রোদে শুকাতে হয়। এভাবে বড়ি তিন থেকে চারদিন রোদে শুকিয়ে নিতে পারলে এই বড়ি অনেক দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। আন্দুলিয়া গ্রামের ফাতেমা বেগম বলেন, শীতের সময় মূলত বড়ি তৈরি করা হয়। এ বড়ি নিজেদের খাওয়াসহ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতেও পাঠানো হয়।
চৌগাছা বাজারের কুমড়ো বড়ির ব্যবসায়ী সুকুমার সরকার বলেন, এ অঞ্চলের কুমড়ো বড়ি খুব সুস্বাদু হওয়ায় দেশের অন্যান্য জেলায় বিশেষকরে ঢাকায় এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হুসাইন জানান, শীত মৌসুমে গ্রামের নারীরা কুমড়ো বড়ি তৈরি করে বাড়তি আয় করছে। গ্রামীণ নারীরা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও পৃষ্টপোষকতা পেলে তারা নিজেদের ভাগ্য উন্নয়ন ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা