বগুড়ার শেরপুরে ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হতে চলেছে
সরকারি দামের সাথে হাটবাজারে দামের বিস্তর ফারাক- আকরাম হোসাইন শেরপুর (বগুড়া)
- ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২৮
বগুড়ার শেরপুরে হাট বাজারের দামের সাথে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত দামের বড় ধরনের পার্থক্য থাকায় অভ্যন্তরীণ আমন মৌসুমে ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হতে চলেছে। শেরপুরের বেশিরভাগ মিলাররা সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হলেও অনেক মিলাররাই এখনো চুক্তির বাইরে রয়েছেন। যারা চাল দেয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তারাও সরকারি গুদামে চাল দিতে অনিহা প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে কৃষকরা এক কেজি ধানও বেচার জন্য গুদামে আসেননি।
উপজেলা খাদ্যবিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বছর শেরপুর উপজেলার ১৯৮টি চাল কলের বিপরীতে আট হাজার ৭৫৫ মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৫৪টি চালকল চার হাজার ৯২১ মেট্রিকটন চাল সরকারকে দেয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এ বছর চুক্তির বাইরে রয়েছে ৪৪টি চাল কল ও দু’টি অটোরাইচ মিল, যাদের বিপরীতে তিন হাজার ৮৩৪ মেট্রিকটন চাল চুক্তির বাইরেই রয়েছে। ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৫৪২ মেট্রিকটন। সরকারিভাবে চালের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ টাকা কেজি ও ধানের দাম ৩৩ টাকা কেজি।
মেসার্স নাইম রাইচ এজেন্সির স্বত্ত্বাধিকারি মাওলানা আব্দুল লতিফ বলেন, সরকার চালের দাম নির্ধারণ করেছেন ৪৭ টাকা কেজি। এখন ধানের যে বাজার তাতে এক কেজি চাল তৈরিতে আমাদের খরচ হচ্ছে ৫১ টাকার ওপরে, এর সাথে গাড়ি ভাড়া লেবার খরচ যোগ করলে কেজিতে ৬ থেকে ৭ টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে।
মির্জাপুর ইউনিয়নের সাগরপুর গ্রামের কৃষক কার্তিক চন্দ্র ও পরেশ চন্দ্র বলেন, আমরা সরকারি গুদামে এর আগে ধান দিয়েছি। সেখানে যে পরিমান ঝামেলা- ধান শুকানো, পরিস্কার করে নেয়া, তাতে এখন গুদামে দেয়ার চেয়ে বাজারে বিক্রি করলে অনেক বেশি দাম পাওয়া যায়। এখন বাজারে একমণ (৩৮ কেজিতে মণ) ধানের দাম এক হাজার ৫০০ টাকা অর্থাৎ কেজি ৩৮ টাকা।
সরেজমিন শেরপুর বারোদুয়ারি হাটে গিয়ে দেখা যায়, (৩৮ কেজিতে মণ) বর্তমানে স্বর্না-৫ প্রতিমণ এক হাজার ৪শ’ ৫০ টাকা, বিআর ৫১ প্রতিমণ এক হাজার ৪শ’ ৫০ টাকা, কাটারি এক হাজার ৮শ’ ৫০ থেকে এক হাজার ৯শ’ টাকা, মোটা ধান জাত ভেদে এক হাজার ৩শ’ থেকে এক হাজার ৩শ’ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরকারি গুদামে দিতে হলে এই ধান উপযোগি করতে প্রতি কেজিতে আরো ৩ টাকার বেশি খরচ হবে।
শেরপুর থানা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলিমুল ইসলাম হিটলার বলেন, কেজিতে ২-১ টাকা লোকসান হলেও লাইসেন্স রক্ষায় সরকারকে চাল দিতাম কিন্ত এখন যে হারে লোকসান হচ্ছে তাতে কোনো অবস্থাতেই এই লোকসান কভার করা সম্ভব হবে না। এমনকি অনেক মিলার সরকারের সাথে চুক্তির সময় যে টাকার বিডি করেছেন সেই বিডির টাকা বাতিল হলেও চাল দিতে পারবেন না।
শেরপুর ধুনট মোড় এলএসডি খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) ফরিদুল ইসলাম বলেন, শেরপুরের দুই গুদাম মিলে এখন পর্যন্ত মাত্র ৯২ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ হয়েছে, এখনো কোনো ধান কিনতে পারিনি।
শেরপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মামুন-এ-কাইয়ুম বলেন, বর্তমান বাজারদরের সাথে সরকার নির্ধারিত বাজারের তারতম্য থাকায় মিলার ও কৃষকরা ধান চাল দিতে চাচ্ছে না। আমরা সব সময় মিলারদের সাথে যোগাযোগ করছি যেন তারা সঠিক সময়ে চাল দিতে পারেন। এ ছাড়াও বর্তমান অবস্থা ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা