দখল-দূষণে অস্তিত্ব সঙ্কটে নন্দকুজা নদী
- গুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতা
- ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২৭
চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বুকচিরে বয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী নন্দকুজা নদী এখন দখল-দূষণে অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছে। স্র্রোতসিনী এ নদীর দুইপাড়ে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা বিভিন্ন স্থাপনা, ময়লা আবর্জনার স্তূপ ও পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। ফলে বর্ষা মৌসুমেও নদীতে সেই স্রোতে আর নেই। বিশেষ করে উপজেলার বাণিজ্যনগরী চাঁচকৈড় হাটের সমস্ত আবর্জনা ফেলে নদীকে সংকুচিত ও দূষিত করা হচ্ছে।
জানা যায়, পদ্মার উৎস্যমুখ রাজশাহীর চারঘাটে বড়াল নদীকে সংকুচিত করে স্লুইস গেট নির্মাণ করার ফলে নন্দকুজা নদীতে পানিপ্রবাহ কমে গেছে। পলি জমে নন্দকুজাসহ উপজেলার আত্রাই-গুমানি নদীর দুইপাড় সংকুচিত হয়ে খালে পরিণত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ভরাট হয়ে গেছে নদীর পাড় ও তলদেশ। তাছাড়া ভূমিদস্যুরা নানা স্থাপনা নির্মাণ করে নদীই হাইজ্যাক করে নিয়েছে। দুই পাড়ে গড়ে ওঠা শহর, হাট-বাজার, মিল, কলকারখানা, গবাদি খামারের অপচনীয় পলিথিন, প্লাস্টিক, ককসিটসহ বিষাক্ত সব বর্জ্য নদীতে ফেলে ভরাট করার প্রতিযোগিতা চলছে। নানা প্রতিবন্ধকতায় নন্দকুজা এখন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে।
এদিকে নানামুখী দখলবাজ ও দূষণের আঘাতে ইতিহাস-ঐতিহ্য হারিয়ে মৃতপ্রায় এ নন্দকুজা নদী বাঁচাতে বাধা নিষেধ মানছে না কেউই। নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি নিষেধ করলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোনোরকম তদারকি নেই। হাট-বাজারের ইজারাদার ও আশপাশের মানুষ নদীকে মেরে ফেলার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন।
নদীরক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান মজনু ও সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক এ প্রতিবেদককে বলেন, নন্দকুজা নদী বাঁচলে বৃহৎ চলনবিল বাঁচবে, পরিবেশ বাঁচবে, জলবায়ু রক্ষা পাবে, জীবন-জীবিকা বাড়বে, জাতীয় আয় বাড়বে, প্রবৃদ্ধি বাড়বে, গড় আয়ু বাড়বে। নদীপাড়ে নির্মিত সব স্থাপনা উচ্ছেদ, বর্জ্য ফেলা বন্ধ, দখল-দূষণমুক্ত করে নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহের দাবিতে জাতীয় পর্যায়ের বেলা, বাপা, স্থানীয় চলনবিল রক্ষা, নদীরক্ষা, বড়াল রক্ষাসহ বিভিন্ন সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। নদী রক্ষায় সরকারের কঠিন থেকে কঠিনতর হস্তক্ষেপ কামনা করে সংগঠনগুলো।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার বলেন, পৌরসভার ময়লা নদীতে না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার জন্য ডাম্পিং স্টেশন তৈরি করা হবে। এছাড়া নদীকে দখল-দূষণমুক্ত রাখতে শিগগিরই মাইকিং করে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা হবে।
নাটোর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, নন্দকুজাসহ জেলার সব নদী রক্ষায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। নন্দকুজা রক্ষা করতে আমরা দ্রুতই ব্যবস্থা নেবো।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা