মেয়াদ শেষ হলেও নির্মাণ হয়নি সেতু নদী পারাপারে টোল ১০ টাকা
- জসিম উদ্দিন খানসামা (দিনাজপুর)
- ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
দিনাজপুরের খানসামা ও বীরগঞ্জ উপজেলাকে বিভক্ত করেছে আত্রাই নদী। দুই উপজেলার মানুষের যাতায়াতের জন্য এই নদীর ওপর ৪৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি সেতুর নির্মাণ কাজ দীর্ঘ ছয় বছরেও শেষ হয়নি। সেতুর কাজ শেষ না করে এক বছর আগেই লাপাত্তা হয়ে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, জয়ন্তীয়া ঘাটে কাঠের সাঁকোর পাশে একটি নৌকা বেঁধে রাখা। এখন এই নৌকার তেমন কাজ নেই। ঘাটের ইজারাদারের লোকজন মাছ ধরতে চাইলে নৌকাটি নিয়ে যান। পাশে থাকা সাঁকোর ওপর দিয়ে কিছু মানুষকে তখন নদী পার হতে দেখা যায়। এ জন্য তাদের টোল দিতে হয়। হেঁটে গেলে গুনতে হয় ১০ টাকা। বর্ষায় সাঁকোটি ডুবে যায়। বেঁধে রাখা নৌকাটি তখন খানসামা ও বীরগঞ্জ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে। টোলের পরিমাণ তখন আরো বাড়ে।
এই সাঁকোটির পাশেই দাঁড়িয়ে আছে বড় বড় কয়েকটি পিলার। সেতুর ৫টি অংশের ৩টি স্প্যান ঢালাই হয়েছে। অবশিষ্ট পিলারগুলো নদীর ওপর দাঁড়িয়ে আছে। সেতুর নির্মাণ কাজে ব্যবহার হওয়া কিছু সামগ্রী, মালবাহী ট্রলি ও পাহারাদারদের রুম রয়েছে। সেখানে অলস সময় অতিবাহিত করছেন কাজ শুরুর সময় থেকে নির্মাণ সামগ্রী দেখভালের দায়িত্বে থাকা দু’জন পাহারাদার।
এমন চিত্র দীর্ঘদিনের। ছয় বছর আগে এখানে একটি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হলেও তা আজও শেষ হয়নি। এতে দুই পাড়ের বাসিন্দারা গত অর্ধযুগ ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) জয়ন্তিয়াঘাটে ৪৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করে। এ সেতুর নির্মাণ কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করলে কাজটি পায় ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুরমা কনস্ট্রাকশন। চুক্তি অনুযায়ী ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরপর দুইবার কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। এর পরও কাজের অগ্রগতি মাত্র ৫৬ শতাংশ। অবশিষ্ট কাজ ফেলে রেখেই এক বছর আগে থেকে লাপাত্তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় বীরগঞ্জ উপজেলার পাল্টাপুর ইউনিয়নের মধুবনপুর ও খানসামা উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের চেহেলগাজী এলাকায় আত্রাই নদীর জয়ন্তিয়াঘাটে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পরে করোনা মহামারীর সময়ে নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে দুই মেয়াদে সময় বৃদ্ধি করে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত কার্যাদেশ দেয়া হয়েছিল। এরপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৫৬ শতাংশ কাজ করে বাকি কাজ বন্ধ করে দেয়।
খামারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক চৌধুরী বলেন, এ সেতুর অভাবে নদীর দুই অঞ্চলের ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষকে অন্তত ১০-১৫ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যাতায়াত করতে হয়।
এ ব্যাপারে দিনাজপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান বলেন, সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করতে ইতোপূর্বে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কয়েকবার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবুও কাজের অগ্রগতি হতাশাজনক। বর্তমানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি বাতিলের প্রক্রিয়া চলছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা