উখিয়ায় থামছে না পাহাড় কাটা, বাড়ছে প্রাণহানি
- হুমায়ুন কবির জুশান উখিয়া (কক্সবাজার)
- ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ উখিয়ায় চলছে নির্বিচারে পাহাড় কাটা। অবস্থাদৃষ্টে স্থানীয়রা বলছেন, এভাবে পাহাড় কাটা অভ্যাহত থাকলে সামনের দিনগুলোতে ব্যাপক ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। পরিবেশবাদীরা বলছেন, পাহাড়ধসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ উখিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটবে।
গত শুক্রবার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে মোহাম্মদ ছৈয়দ উল্লাহ (১০) নামের এক শিশু নিহত হয়। এ ঘটনায় আরও দুইজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে উখিয়া সদর মহুরি পাড়ায় পাহাড় ধসে ৩ রোহিঙ্গা শ্রমিক নিহত হন। নিহত ছৈয়দ উল্লাহ ১৫ নম্বর ক্যাম্পের ইমাম হোসেনের ছেলে। আহতরা হলো- ১৪ নম্বর ক্যাম্পের সৈয়দ নুর (১৫) ও একই ক্যাম্পের এনায়েত রহমান (৬)। এর পরও থামছে না পাহাড় কাটা।
সরেজমিনে দেখা মিলে, রাজাপালং, জালিয়া পালং, রতœাপালং, হলদিয়া পালং, পালংখালী ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় নিধনে সবাই যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছে। একটি মহল পাহাড় কেটে ট্রাক, ডাম্পার ও ট্রাক্টর বোঝাই করে মাটি নিয়ে বিক্রি করছে। এই মাটি ইটভাটা, কৃষি জমি ভরাট, ভূমিদস্যুদের অবৈধ জায়গা দখল ও পুকুর ভরাটসহ নানা কাজে ব্যবহার করছে। স্থানীয়রা জানান, চিহ্নিত পাহাড় খেকো, বালি খেকো, জবর দখলকারীসহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের সাথে টাকার বিনিময়ে আঁতাত করে পাহাড় কাটা হচ্ছে। এ বিষয়ে সরাসরি সহযোগিতা করছেন বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা।
স্থানীয় রেজাউল করিম বলেন, ৫ আগস্টের পর আমরা মনে করেছিলাম উখিয়া থানা, ভূমি অফিস, সাব রেজিস্ট্রি অফিস, বন বিভাগ ও উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দফতরে মানুষ তাদের প্রাপ্য নাগরিক সেবা পাবে। কিন্তু সব কিছুই চলছে আগের মতোই। কোন অফিসে টাকা ছাড়া নাগরিক সঠিক সেবা পাওয়া যায় না। বিট কর্মকর্তারা পাহাড় খেকোদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পাহাড় কাটায় সরাসরি সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
উখিয়াতে সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পালংখালী খাল ও বালুখালী খালের বালুমহাল থেকে ইজারাবিহীন বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী একাধিক মহল। মামলা, জরিমানা দিয়েও তাদেরকে দমাতে পারছে না কেউ। অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ফলে খালের পাড় ভাঙনের পাশাপাশি পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে প্রতিনিয়তই। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি সচেতন মহলের।
প্রশাসন বলছেন, বেআইনিভাবে কোনো খাল থেকে বালু উত্তোলনের সুযোগ নেই। ইখয়া থানার ওসি আরিফ হোসেন জানান, ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় কাটার সময় মাটি ধসে পড়ে। এতে মাটির নিচে তিন শিশু চাপা পড়ে। দুই শিশুকে এ সময় উদ্ধার করা সম্ভব হলেও একটি শিশু মাটি চাপায় মারা যায়।
৮ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের এসপি খন্দকার ফজলে রাব্বী জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাহাড়গুলো এখনো পুরোপুরি বৃক্ষশূন্য। এতে পানি ধরে রাখার ক্ষমতা না থাকায় এবং শুস্ক মৌসুম হওয়ায় আকস্মিক এই পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগেও ১৯ জুন রাত থেকে সকালের মধ্যে ১, ৮, ৯, ১০ ও ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধ্বসে ১০ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ১ নম্বর ক্যাম্পের একজন, ৮ নম্বর ক্যাম্পের একজন, ৯ নম্বর ক্যাম্পের তিনজন, ১০ নম্বর ক্যাম্পের চারজন এবং ১৪ নম্বর ক্যাম্পের একজনের মৃত্যু হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা