যশোরে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শঙ্কা
- এম আইউব যশোর
- ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৫
- খোলা বাজারে দাম বেশি
- চাল দিতে চাচ্ছেন না মিলাররা
যশোরের মিল মালিকরা খাদ্যগুদামে চাল দিতে চাচ্ছেন না। এর কারণ, তারা বলছেন সরকারের বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে খোলা বাজারে চালের দাম বেশি। ফলে, আমন মৌসুমে খাদ্যগুদামে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খাদ্য কর্মকর্তারা। কর্মকর্তাদের এখন একটাই চিন্তা, যারা চুক্তি করেছেন তাদের কাছ থেকে যেকোনো মূল্যে শতভাগ চাল সংগ্রহ করা।
আমনের এই সংগ্রহ মৌসুম শুরু হওয়ার পর বেশ কিছুদিন পার হলেও অনেক মিল মালিক এখন পর্যন্ত চুক্তিই করেননি। বিশেষ করে অটোমিল মালিকরা চুক্তি না করে কেবল সময় নিচ্ছেন। যদিও লাইসেন্স রক্ষায় সরকারি চাপের মুখে অধিদফতরে নতুন করে চুক্তি করতে কয়েকজন আবেদন করেছেন।
চলতি আমন মৌসুমে যশোরে সিদ্ধ চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ হাজার ২৪৭ মেট্রিক টন। এরমধ্যে চুক্তি হয়েছে সাত হাজার ৭৭৯ দশমিক ৯৪৫ মেট্রিক টনের। আতপ চালের লক্ষ্যমাত্রা ৮০১ মেট্রিক টন। পুরোটা সরবরাহের জন্য মাত্র একটি মিল চুক্তি করেছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দফতর থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, এ মৌসুমে যশোরে চুক্তিযোগ্য মিল রয়েছে ১৬৩টি। এরমধ্যে ১৩৪টি হাস্কিং ও ২৮টি অটোরাইস মিল। আমন চাল সরবরাহের জন্য চুক্তি করেছেন ৯৭ জন মিলার, তাদের মধ্যে ৮১ জন হাস্কিং ও ১৬ জন অটোরাইস মিলার। এ পর্যন্ত যে পরিমাণ চাল সরবরাহ করার চুক্তি হয়েছে তা লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, যশোরে সরকারি খাদ্যগুদামে প্রতি বছর লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক চাল সরবরাহ করে থাকে বৃহৎ দু’টি রাইস মিল। এই রাইস মিল দু’টি হচ্ছে নওয়াপাড়ার মজুমদার ও রূপদিয়ার অ্যারিস্টো ফুড। সূত্র জানিয়েছে, যখন লাভের সম্ভাবনা থাকে তখন এ ধরনের বড় রাইস মিল তাদের বরাদ্দের বাইরে অতিরিক্ত বরাদ্দ নিয়ে চাল সরবরাহ করে। আর যখন খোলাবাজারে চালের দাম বেশি থাকে তখন নিজেদের উৎপাদিত চাল অধিক লাভে তারা বাইরের বাজারে বিক্রি করেন। এ কারণে যশোরে কাঙ্খিত মজুত গড়ে তোলা সম্ভব হয় না।
চলতি আমন মৌসুমে সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহে প্রতি কেজির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ টাকা। মিলারদের দাবি, খোলা বাজারে মোটা চালের দাম অনেক বেশি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অটোরাইস মিলের এক মালিক বলেন, ‘খোলাবাজারে চালের দাম বেশি। ধানের দামও বেশি। সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করে আমরা কি লাখ লাখ টাকা লোকসান করব?’
এ মৌসুমে গুদামে সরকারি চাল সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু হয়েছে ১৭ নভেম্বর থেকে, চলবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। অর্ধেকের বেশি সময় চলে গেলেও সংগ্রহে আশানুরূপ অগ্রগতি নেই বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
চুক্তিবদ্ধ মিলাররা কীভাবে সরকার নির্ধারিত মূল্যে চাল সরবরাহ করতে পারছেন- এর জবাবে এক মিল মালিক জানান, যারা চুক্তিবদ্ধ তাদের বেশির ভাগই অটোরাইস মিলের চাল সরবরাহকারী। অটোরাইস মিলে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় তারা সরকার নির্ধারিত মূল্যে চাল সরবরাহ করতে পারছে। মিলের লাইসেন্স থাকায় এই সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছেন মিল মালিকরা।
বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে চৌগাছা উপজেলা রাইস মিল মালিক সমিতির সভাপতি সাদিয়া রাইস মিলের মালিক আব্দুল আলিম বলেন, বাজারের অবস্থা খুবই খারাপ। ছয়টন চাল দিবো বলে খাদ্যবিভাগের সাথে চুক্তি করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দিতে পারব বলে মনে হচ্ছে না।
সদর উপজেলার এস কে রাইস মিল মালিক আমির হোসেনকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। সদর উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, বাজারে দাম বেশি হওয়ায় মিলার চুক্তি করছেন ধীরগতিতে। অন্যান্য মৌসুমের মতো সংগ্রহেও গতি কম।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সেফাউর রহমান বলেন, যা চুক্তি হয়েছে তার শতভাগ অর্জনের জন্য সবাই মিলে আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। যাতে সর্বোচ্চ সংগ্রহ করা যায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা