সামেকের ৬ ডায়ালাইসিস মেশিন ৮ মাস ধরে বিকল
ভোগান্তিতে কিডনি রোগীরা- মুহা: জিল্লুর রহমান সাতক্ষীরা
- ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৩
কোনো রোগীর কিডনি বিকল হলে ডায়ালাইসিস করতে হয়, সেটি অ্যাকিউট রেনাল ফেইলিওর এবং ক্রনিক রেনাল ইনজুরি হতে পারে। ডায়ালাইসিস একটি ব্যয়বহুল চিকিৎসাব্যবস্থা। সবার জন্য এর ব্যয় বহন করা খুবই কঠিন। ফলে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের ছয়টি ডায়ালাইসিস মেশিন দীর্ঘ আট মাস ধরে বিকল থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন জেলার কিডনি রোগীরা।
সামেক হাসপাতালে সিরিয়াল না পেয়ে দূর-দূরান্ত থেকে আসা অনেক কিডনি রোগী ডায়ালাইসিস করতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। আবার বাধ্য হয়ে অনেক রোগীকে বেশি টাকা খরচ করে বাইরের হাসপাতাল বা ক্লিনিক থেকে ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছে। এতে চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে সাধারণ কিডনি রোগীদের। তা ছাড়া এখানে নেই কোনো কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
প্রসঙ্গত, উন্নত চিকিৎসা সেবার জন্য ২০১১ সালে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় প্রতিষ্ঠিত হয় ৫০০ শয্যার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। এ হাসপাতালে ২০১৩ সালে দু’টি ডায়ালাইসিস মেশিন দিয়ে প্রথমে কিডনি রোগীদের সেবা দেয়া শুরু হয়। ২০১৫ সালে স্থাপন করা হয় আরো কিছু ডায়ালাইসিস মেশিন। বর্তমানে সেখানে ১৬টি মেশিন থাকলেও সময় মতো প্রয়োজনীয় সার্ভিসিং না করায় নষ্ট হয়ে গেছে ছয়টি। আর যেগুলো সচল রয়েছে তাতে সিরিয়াল পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগীরা। শুধু সাতক্ষীরা নয়, খুলনা, যশোরসহ আশপাশের জেলা থেকেও কিডনি রোগী ডায়ালাইসিস করতে আসেন এখানে। তবে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর কিডনি বিশেষজ্ঞ চিকৎসক নিয়োগ দেয়া হয়নি।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, মাত্র ৪০০ টাকা দিয়ে কিডনি ডায়ালাইসিস করা হয় সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আর বেসরকারি হাসপাতালে কমপক্ষে পাঁচ হাজার টাকা ব্যয় হয়। তবে সাত-আট মাস ধরে ছয়টি ডায়ালাইসিস মেশিন নষ্ট থাকায় মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে অনেক কিডনি রোগীর।
শ্যামনগর উপজেলার নকিপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের বাবা রফিকুল ইসলাম (৬৫) কিডনি রোগে আক্রান্ত। ডায়ালাইসিস করার জন্য বাবাকে নিয়ে সামেক হাসাপাতালে এসে জানতে পারেন অধিকাংশ ডায়ালাইসিস মেশিন নষ্ট। সিরিয়াল পেতে এক থেকে দেড় মাস লাগবে। হতাশ হয়ে বাবাকে নিয়ে চলে যান খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা: কাজী আরিফ আহমেদ বলেন, সাতক্ষীরায় যেভাবে কিডনি রোগী বাড়ছে, সে তুলনায় চিকিৎসাব্যবস্থা অপ্রতুল। হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এখানে কোনো কিডনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেয়া হয়নি। এ কারণে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বিড়ম্বনায় পড়েন।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা: মো: কুদরত-ই-খোদা বলেন, বিগত ২০১৫ সালের দিকে জাপান ও জার্মান থেকে আমদানি করা হয় ১৬টি ডায়ালাইসিস মেশিন। তার পর কখনো কখনো মেরামত করে চালানো হয় ডায়ালাইসিসের কাজ। তবে সাত-আট মাস ধরে ছয়টি মেশিন নষ্ট হয়ে আছে। তা ছাড়া একজন কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও দরকার। ৫৫টি নতুন কিডনি ডায়ালাইসিস মেশিন ও কিডনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পত্র দেয়া হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি বলে জানান তিনি।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বলেন, হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে সঙ্কট লেগেই রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা