মির্জাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ মাস ধরে পানি নেই
- উত্তম গোলদার মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী)
- ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও এর কম্পাউন্ডের ভিতরে গত তিন মাস ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তিন মাসের অধিক সময় ধরে পানির পাম্প অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকায় হাসপাতালে পানি সরবরাহ বন্ধ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও কম্পাউন্ডের বাসিন্দারা। এমনকি হাসপাতালের ভিতরের গভীর নলকূপটিও আরো আগে থেকেই অকেজো পড়ে আছে।
পানি না থাকায় হাসপাতালে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কাজসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সব কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অস্থায়ীভাবে হাসপাতালের সামনের পুকুরের ছোট্ট একটি মোটর বসিয়ে কোনোভাবে পানি সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছে। ছোট্ট মোটর দিয়ে ভবনের চারতলায় পানি উঠাতে না পেরে প্রয়োজনে অনেকে নিচতলা বা দোতলা থেকে পানি বহন করে নিয়ে যাচ্ছে।
অন্য দিকে, পুকুরের নোংরা পানি ব্যবহারের ফলে রোগীরা আরো রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ছে। রোগী ও তাদের স্বজনদের অনেকেই প্রয়োজনীয় পানি হাসপাতালের বাইরে থেকেই সংগ্রহ করে নিচ্ছেন। এ দিকে উপজেলা হাসপাতাল ভবনের নিচতলায় সিঁড়ির নিচে চলতি বছরের ১০ অক্টোবর মূল বৈদ্যুতিক সার্কিট ব্রেকার বোর্ড পুড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে ডাইরেক্ট লাইন দিয়ে সংযোগ চালু করায় হাসপাতালের দামি যন্ত্রপাতি নিতান্তই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ দিকে পানি না থাকার বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরকে জানানো হলেও তারা পানি সাপ্লাই ও বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপতালের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে অনেকেই বোতলে বা বালতিতে করে পানি নিয়ে আসছেন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের স্বজনরা। হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ১৩ ডিসেম্বর শনিবার পর্যন্ত ৫০ শয্য হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ৫২ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ডেঙ্গু রোগী ১৬ জন, ডায়রিয়া রোগী ২০ জন এবং অন্য রোগী ১৬ জন। বৃদ্ধা ও শিশু রোগীই বেশি। পানি না থাকায় তারা বিভিন্ন উপায়ে পানি সংগ্রহ করে গোসলের কাজ সারছেন। একইভাবে হাসপাতাল কমপ্লেক্সের ভেতরের কোয়ার্টারের বাসিন্দারাও পানির অভাবে নাকাল অবস্থায় পড়েছেন। তা ছাড়া হাসপাতালের বেড়ের চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশি থাকায় তাদের ভোগান্তিও এখন চরমে।
এ ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: চিন্ময় হাওলাদার বলেন, পানি সঙ্কট সমাধানের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরকে চিঠির মাধ্যমে অবহিত করা হয়েছে। গভীর নলকূপ বসানো ও বৈদ্যুতিক সমস্যা সমাধানের জন্য আবেদন করা হয়েছে। অবশ্য অস্থায়ীভাবে সমস্যা সমাধানের জন্য অন্য একটি পানির উৎস থেকে পানি সরবরাহ করার চেষ্টা করা হয়েছে।