গৌরনদীতে ৪ বছরেও শেষ হয়নি সেতু নির্মাণকাজ
- আরিফিন রিয়াদ গৌরনদী (বরিশাল)
- ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ইল্লা স্ট্যান্ড থেকে তুলাতলা বাজারে যেতে খালের ওপর আরসিসি গার্ডার সেতুটির নির্মাণকাজ শুরুর চার বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে ২৩ মিটারের এ সেতুটি পার হতে বিকল্প রাস্তায় পাড়ি দিতে হয় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ। এ ছাড়াও সরকারি খাস জমি রেখে জোর করে স্থানীয় বাসিন্দাদের মালিকানা সম্পত্তিতে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ইল্লা স্ট্যান্ড থেকে তুলাতলা বাজারে যেতে খালের ওপর ২৩ মিটার দৈর্ঘের আরসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণে দুই কোটি ৭৩ লাখ ৫১ হাজার ১৯৯ টাকা ব্যয়ে ২০২১ সালের ১১ এপ্রিল মেসার্স কোহিনুর এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। ২০২৪ সালের শেষের দিকে এসে এখনো শেষ হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোহিনুর এন্টারপ্রাইজের অধীনে গৌরনদী উপজেলায় আরো ১৬টি সেতু নির্মাণ কাজ এখনো চলমান রয়েছে। যার একটিও নির্ধারিত সময় শেষ করতে পারেননি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কাজ শুরুর কয়েক মাসের মাথায় ২০২১ সালের শেষের দিকে সেতুটির নির্মাণকাজ ৭০ ভাগ শেষ করে কাজ বন্ধ রাখে ঠিকাদার। পরবর্তীতে প্রায় চার বছর পর সেতুর কাজ তড়িঘড়ি করে সম্পন্ন করতে চলতি বছরের ডিসেম্বরে আবার কাজ শুরু করা হয় এবং বিকল্প চলাচলের বাইপাস সড়কের মাটি ভেকু মেশিন দিয়ে এপ্রোচ সড়কের কাজে লাগাচ্ছে ঠিকাদার। এতে করে গত এক সপ্তাহ ধরে বাইপাস সড়ক না থাকায় ভোগান্তিতে পরেছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা মৃত গঞ্জে আলী সরদারের ছেলে সিরাজ সরদার অভিযোগ করে বলেন, আমাদের মালিকানা রেকর্ডিও প্রায় ৪ শতাংশ জমির মধ্যে জোরপূর্বক সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। নিষেধ করলেও আমার কথা শুনেননি তারা। এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে আমাদের বসবাস করতে খুব অসুবিধা হচ্ছে। স্থানীয় সাদের আলী হাওলাদারের ছেলে রশিদ হাওলাদার জানান, সেতু নির্মাণের জন্য আমার জমি দখল করে নেয়া হচ্ছে দেখে আমি নিষেধ করি কিন্তু তারা আমার কথা শুনেননি। তাই আমি ইএনও’র কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
পথচারী সুরুজ মিয়া বলেন, এতদিন সেতুর কাজ বন্ধ থাকলেও অন্তত সংযোগ সড়ক দিয়ে কোনোভাবে হেঁটে পার হওয়া যেত, কিন্তু এখন কাজ শুরু করে আরো ভোগান্তি হলো। এ ছাড়া ২৩ মিটারের এ ব্রিজটি পার হতে হলে বিকল্প রাস্তায় এখন প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিতে হয়।
ঠিকাদার কহিনুর এন্টারপ্রাইজের প্রকল্প পরিচালক কাইউম খান জানান, খালের পাড় ভাঙ্গা ও বিদ্যুৎ সমস্যায় সেতু নির্মাণে দেরি হয়েছে। সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ। শুধু এপ্রোচ সড়কের কাজ চলমান রয়েছে যা ৩-৪ দিনের মধ্যে শেষ হবে। মালিকানা জমিতে জোরপূর্বক সেতু নির্মাণের বিষয়ে বলেন, আমরা পূর্বের সেতু ভেঙে খাল বরাবর নতুন করে কাজ শুরু করেছি।
গৌরনদী এলজিইডি প্রকৌশলী অহিদুর রহমান জানান, ব্যক্তি মালিকানা কিংবা সরকারি খাস জমিতে সেতু নির্মাণ হয়েছে কি না তা আমার জানা নেই।
মালিকানা জমিতে জোরপূর্বক সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আবু আবদুল্লাহ খান জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা