১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

নির্মাণকাজ অসম্পূর্ণ রেখে পালিয়েছেন ঠিকাদার

-


ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ভবন নির্মাণের কাজ ৬ বছরেও শেষ করতে না পেরে অবশেষে পালিয়েছেন মেসার্স মনির অ্যান্ড জেএইচএম নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটি দুইবার জরিমানা দিয়েও নির্ধারিত মেয়াদে কাজ শেষ করতে না পেরে গত চার মাসে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সূত্র জানায়, সোনাগাজী ৫০ শয্যা হাসপাতালের ৩১ শয্যা বিশিষ্ট ছয় তলা ফাউন্ডেশনের তিন তলা ভবন নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালে ৯ কোটি ৬৯ লাখ ৫২৫ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বরাদ্দের মধ্যে আরো রয়েছে দ্বিতীয় তলার ড্রাইভার কোয়ার্টার, এক তলার বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সাব স্টেশন, আভ্যন্তরীণ সড়ক ও ড্রেন নির্মাণ, গভীর নলকূপ এবং ১৯ শয্যার তিন তলা পুরাতন ভবনের সংস্কার কাজ। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ১১ মাসের মধ্যে ওই কাজগুলো সম্পাদনের শর্তে ২০২২ সালের ৬ জুন কার্যাদেশ পান। দুইবার মেয়াদ বৃদ্ধির পর গত ৩১ মে দ্বিতীয় দফার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তারা কাজ শেষ করতে পারেনি। অবশেষে কাজ রেখে পালিয়ে যায় ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠানটি। স্থানীয়রা বলছেন, স্বাস্থ্য প্রকৌশল আধিদফতরের নিয়মিত তদারকি না থাকায় যথেচ্ছভাবে কাজ করছিল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: উৎপল দাস জানান, তিনি নির্মাণ কাজ সম্পর্কে খোদ কিছুই জানেন না। কার্যাদেশসহ কোনো ধরনের নথিপত্র নেই তার কাছে। তাই নির্মাণ কাজের গুণগত মান ও পরিধি নিয়েও অন্ধকারে ছিলেন তিনি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন জানান, হাসপাতালটির নির্মাণ কাজে অতি নিম্নমানের ইট, নিম্নমানের বালু, স্বল্প গ্রেডের রড, নিম্নমানের পাথর, সিলেকশন বালুর পরিবর্তে ভিটি বালু, মরিচা পড়া রড দিয়ে ঘূর্ণিঝড় রিমালের রাতেও ঢালাইয়ের কাজ করা হয়েছিল। নির্মাণস্থলে সাঁটানো হয়নি কোনো সিটিজেন সার্টার। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির ধীরগতির কাজ ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে রোগীরা পোহাচ্ছেন অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। হাসপাতালের সিঁড়ি ও বারান্দায় বিছানা ও বেড পেতে চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে তাদের। ধুলোবালিতে সীমাহীন কষ্টের শিকার হচ্ছেন সাধারণ রোগী।

স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নোয়াখালী জোনের সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম নির্ধারিত সময় কাজ সম্পাদন না হওয়ায় সংশয় প্রকাশ করে বলেন, আমি দায়িত্ব পেয়েছি মাত্র কয়েক মাস হলো। কিন্তু আগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বিষয়টি বেশি বলতে পারবেন। এদিকে সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, কাজ শুরুর আগেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি সাবেক সরকারের আমলে মোটা অঙ্কের চাঁদা দিয়ে কাজ শুরু করতে হয়।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মনির অ্যান্ড জেএইচএমের পরিচালক তানিম জাহাঙ্গীর বলেন, চাঁদার টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে দেরিতে কাজ শুরু করা হয়েছিল। শত চেষ্টা করেও নির্ধারিত মেয়াদে আমরা কাজ শেষ করতে পারিনি। নতুন করে দরপত্র পেলে যথাসময়ে কাজ শেষ করার চেষ্টা করব।

 


আরো সংবাদ



premium cement