১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রাঙ্গাবালীতে আমনের রেকর্ড ফলন হলেও মিলছে না কাক্সিক্ষত দাম

রাঙ্গাবালীতে আমনের রেকর্ড ফলন হলেও মিলছে না কাক্সিক্ষত দাম -


সোনালি রঙে ছেয়ে থাকা বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে আমন ধানের ভারে নুয়ে পড়া শীষ জানান দিচ্ছে তারা ফলেছেও বেশ। থেমে থেমে বাতাসের দোলায় দোল খাচ্ছে চকচকে, পুষ্ট, সোনালি ধানের শীষগুলো। মাঝে মধ্যে চড়–ই, বাবুই কিংবা বুলবুলির ঝাঁক এসে পড়ছে চাষিদের এই স্বর্ণখনিতে। পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে কিচিরমিচির করে খাচ্ছে আর উড়ে বেড়াচ্ছে ধান ক্ষেতের এপাশ থেকে ওপাশে। যেন চাষিদের সাথে তাদের মনেও আনন্দের জোয়ার। সাথে মাঠভরা পাকা সোনালি ধানের ম ম গন্ধে মাতোয়ারা কৃষক পরিবারও।

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার ফসলের মাঠজুড়ে দুলছে সোনালি ধান। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ধান কাটা। ফলন দেখে তারা খুশি হলেও শ্রমমূল্য ও উৎপাদন খরচ অনুযায়ী ধানের কাক্সিক্ষত বাজার দর মিলছে না বলে দাবি করছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আমন উৎপাদনে বিগত দিনের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে এবার। প্রতি হেক্টরে গড়ে পাঁচ মেট্রিক টন হারে প্রায় দেড় লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে এ উপজেলায়। চলতি মৌসুমে রাঙ্গাবালীতে ২৮ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। গড়ে প্রতি হেক্টরে পাঁচ মেট্রিক টন হারে প্রায় এক লাখ ৪২ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন ধান উৎপন্ন হয়েছে। হিসাব করলে যার মূল্য ৪০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

চলতি মৌসুমে আমনের উৎপাদন ও বাজারদর নিয়ে কথা হয় উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের কৃষকদের সাথে। বেশ খুশিমনেই কৃষক আক্তার গাজী বলেন, ‘আমাগো এ বছর খোন্দপাতি (ধানের ফলন) ভালো হইছে। আমরা খুশি ভাবেই দাইমাই (ধান কাটি)। মৌসুম শুরুর দিকে বইন্যা-বাদলের পানি থাকায় ধানের চারা লাগাইতে (রোপণে) কিছুটা বিলম্ব হইছিল। পরে আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলনও ভালোই হইছে। হুনছি (শুনেছি) বাজারে নাকি দরদামও তেমন নাই। তবে দামটা আরেকটু বাড়লে আমাগো (আমাদের) বেশি ভালো অইতো।’

একই ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড আমলিবাড়িয়ার আরেক কৃষক জহিরুল সরদার বলেন, আমাগো বুঝ (ভালো মন্দ বোঝার বয়স) হইছে পর্যন্ত এমন ফলন দেহি নাই। আমরা খুশি। তবে জমির দাম, চাষাবাদ খরচ, সার-কীটনাশকসহ ধান কাটানো পর্যন্ত যে উৎপাদন খরচ হয়, সেই তুলনায় ধানের দাম কম।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, মৌসুমের শুরুতে অতিবৃষ্টির কারণে বীজতলার ক্ষতি এবং শেষ দিকে ঘূর্ণিঝড় ‘দানার’ প্রভাব থাকলেও উন্নত জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান ও পরবর্তীতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমনের এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। যার কারণে বিগত বছরগুলোর উৎপাদন রেকর্ড ভেঙেছে এবার। এতে কৃষকেরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান তো হবেই।


আরো সংবাদ



premium cement