২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

পাবনায় খেজুরের গুড় তৈরির ধুম

পাবনায় খেজুরের গুড় তৈরির ধুম -

পাবনায় শীতে খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরির ধুম পড়েছে। প্রতিদিন গাছিরা খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তা থেকে সুস্বাদু গুড় তৈরি করছেন। গুড়ের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় বাজারে দামও বেড়েছে। তবে গাছ ভাড়া ও দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে গাছিদের গুড় উৎপাদন খরচও বেড়েছে। পাবনার খেজুর গুড় শুধু একটি খাদ্য উপকরণ নয়, এটি এ অঞ্চলের অর্থনীতি ও সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে খেজুর গুড়ের দাম ও চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী চিনি, আখের গুড়, আটা ও ফ্লেবার দিয়ে তৈরি করছে ভেজাল গুড়। স্থানীয় হাট-বাজারে এই গুড় প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সুজানগরের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রথমবার পরিবার নিয়ে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া দেখতে এসেছি। এখানকার গুড়ের স্বাদ অসাধারণ।
এ বছর পাবনার সুজানগর, চাটমোহর ও আটঘড়িয়া উপজেলায় রাজশাহী থেকে কিছু গাছি এসে খেজুরগাছ ভাড়া নিয়ে গুড় উৎপাদন করছেন। গাছি আব্দুল কাদের বলেন, আমরা স্বাস্থ্যসম্মতভাবে গুড় তৈরি করছি। প্রতিদিন গড়ে ১২৫-৩০ কেজি গুড় উৎপাদন করছি। তবে গাছ ভাড়া ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে প্রতি কেজিতে ৫০ থেকে ৭০ টাকা দাম বেড়েছে। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি গুড় বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা দরে। দশ কেজি রস জ্বালিয়ে এক কেজি খাঁটি খেজুরের গুড় তৈরি হয়।
পাবনার বনগ্রামের গাছি জব্বার শেখ জানান, গত কার্তিক মাস থেকে তিনি ১০০টি গাছ চুক্তিভিত্তিক নিয়ে গুড় তৈরি ও বিক্রি করছেন। প্রতি সপ্তাহে ৩০ থেকে ৩৫ কেজি গুড় বিক্রি করছেন। অগ্রিম অর্ডারে প্রতি কেজি খাঁটি গুড় ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিন বলেন, শীত মৌসুমে খেজুরের গুড় আমাদের অঞ্চলের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখে। তবে আধুনিক পদ্ধতি ও প্রশিক্ষণের সুযোগ পেলে গাছিরা আরো বেশি লাভবান হতে পারবেন। গাছিরা মনে করেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পাবনার গুড় উৎপাদন বাড়বে।
বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা: ফাতেমা তুজ জান্নাত বলেন, কাঁচা খেজুরের রস পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। কাঁচা রস থেকে নিপাহ ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। তাই গাছিদের স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতি অনুসরণ করা এবং গাছে নেট ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement