ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে রূপগঞ্জের চনপাড়া-ডেমরা সেতু
- শফিকুল আলম ভূঁইয়া রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
- ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর মোহনায় চনপাড়া-ডেমরা সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কর্তৃপক্ষ সেতুর ওপর সাইনবোর্ড লাগিয়েই যেন দায়িত্ব শেষ করেছেন।
চার বছর ধরেই সেতুটির দুরবস্থা। হাতলগুলো নিজ থেকেই খসে পড়ছে। ছোট্ট কোনো যানবাহন গেলেই কাঁপতে থাকে সেতুটি। মনে হয় এই বুঝি ভেঙে পড়বে। সেতুর পিলারের পলেস্তরা খসে রড বেরিয়ে গেছে। মনে হয় সেতুটির যেন কোনো অভিভাবক নেই। বড় কোনো দুর্ঘটনার পর হয়তো কর্তৃপক্ষের টনক নড়বে। কথাগুলো বলছিলেন সেতুর পাশে বসবাসকারী ফাতেমা আক্তার। মীরপাড়া এলাকার ছয় বছরের ছোট্ট শিশু আরাফ হোসেন বলেন, ওই পাড়ে আমার নানীর বাড়ি। আমি ভয়ে বেড়াতেও যাই না। যদি ভেঙে পড়ে সেতুটি। যদি গাড়িটি পড়ে যায় নদীতে।
যানবাহন চালক ও পথচারীরা সারাক্ষণ আশঙ্কায় থাকেন কখন যেন সেতুটি ধসে শীতলক্ষ্যায়। নির্ধারিত ৬০ বছর সময় মেয়াদের আগেই সেতুটির নড়বড়ে অবস্থা। এই নড়বড়ে সেতু দিয়েই প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার অপেক্ষা করছেন স্থানীয়রা। এমন ঝুঁকিপূর্ণ থাকার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়সাড়াভাবে শুধু একটি সাইনবোর্ড টানিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতর সূত্র জানায়, ১৯৯১ সালে প্রায় এক কোটি দশ লাখ টাকা ব্যয়ে বালু নদের ওপর ডেমরা-চনপাড়া এলাকায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এর দৈর্ঘ্য ১১০ ফুট, প্রস্থ ১২ ফুট। রাজধানী ঢাকার সাথে ইট, বালু ও অন্যান্য মালামাল নেয়ার সুবিধার্থে বালু নদীর ওপর সেতুটি নির্মিত হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে ৬০ বছর মেয়াদি চুক্তিতে নির্মাণ করা হলেও মাত্র ৩৪ বছরেই সেতুর এমন দশা!
নদীতে চলমান ট্রলারের ধাক্কায় সেতুর চারটি পিলার, ভিম ও রেলিংয়ের বিভিন্ন অংশের পলেস্তরা খসে পড়েছে। স্থানীয় সিএনজিচালক লোকমান হোসেন বলেন, এই সেতু পার হওয়ার সময় ভয়ে থাকি। মনে হয় গাড়িসহ সেতুটি বুঝি এই ভেঙে পড়ল নদীতে।
স্থানীয়রা জানায়, এ সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। এটিই রাজধানী ঢাকার সাথে রূপগঞ্জের পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম। এ দিকে বালু নদী দিয়ে রাত-দিন সারাক্ষণ বালু বোঝাই বাল্কহেড ও মালবাহী ট্রলার চলাচল করে। এসব বাল্কহেডের ধাক্কায় কখন বুঝি ভেঙে পড়ে সেতুটি।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মেহমুদ মুরশেদ উল আল আমিন বলেন, সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই বার বসানো হয়েছে। যাতে যান চলাচল করতে না পারে। কে বা কারা রাতের আঁধারে সেই বারগুলো চুরি করে নিয়ে গেছে, কে জানে। তবে, সেতুটি নতুন করে নির্মাণের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এখনো পাস হয়নি। কবে হবে তাও জানা নেই। এ ছাড়া বিআইডব্লিউর আপত্তির কারণেও সেতুটির পুনর্নির্মাণে বিঘ্ন হচ্ছে।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুততার সাথে সেতু পুনর্নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে। আশা করি খুব শিগগিরই কাজ শুরু করতে পারব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা